অনিকেত মাহাতো, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। —ফাইল চিত্র।
ধর্মতলার অনশনমঞ্চে অসুস্থ হয়ে ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি তিন জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। তাঁদের শারীরিক অবস্থা এখন কেমন, সোমবার তার রিপোর্ট দিলেন চিকিৎসকেরা। রবিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পুলস্ত্য এখন সঙ্কটে থাকলেও আপাতত স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের (এনআরএস) মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান জয়দীপ দেব। অন্য দিকে, অনুষ্টুপের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে আগে চেয়ে। অনিকেত এখনও দুর্বল। সোমবার তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড বসবে। তাঁর বেশ কিছু পরীক্ষা করা হবে।
অনিকেত, অনুষ্টুপর পর রবিবার রাতে ধর্মতলার মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পুলস্ত্য। সন্ধ্যা থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছিল। পেটে ব্যথা শুরু হয়েছিল। সঙ্গে বমি ভাব ছিল। অনশনমঞ্চে চিকিৎসকেরা তাঁকে পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, মূত্রে কিটোন বডির পরিমাণও বেড়েছে। তার পরেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুলস্ত্যকে ভর্তি করানো হয় এনআরএসে। সেখানে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিমও গঠন করা হয় পুলস্ত্যের চিকিৎসার জন্য। সেই দলে রয়েছেন জেনারেল মেডিসিন, চেস্ট, কার্ডিয়োলজি, নেফ্রোলজি এবং অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরাই পুলস্ত্যের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করছেন। সোমবার চিকিৎসক জয়দীপ দেব জানান, রাতে যখন পুলস্ত্যকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল, তখন খুবই আশঙ্কাজনক ছিল তাঁর শারীরিক অবস্থা। তাঁর রক্তেে গ্লুকোজ়ের মাত্রা অস্বাভাবিক নেমে গিয়েছিল। সঙ্কট তৈরি হয়েছিল ইলেক্টোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায়। কিন্তু দ্রুত চিকিৎসার ফলে তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের দিকে এসেছে। জয়দীপ বলেন, ‘‘যে হেতু অনেক দিন ধরে অনশন করেছেন পুলস্ত্য, তাই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও কিছুটা সময় লাগবে ওঁর। শরীরে স্যালাইন চলছে। আগের চেয়ে তিনি খানিক সুস্থ। সঙ্কট কাটেনি। তবে পুলস্ত্য আপাতত স্থিতিশীল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল আগের চেয়ে সন্তোষজনক।’’
গত ১০ অক্টোবর রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল অনিকেতকে। অনুষ্টুপকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় গত ১২ অক্টোবর। চিকিৎসকেরা জানান, অনিকেতের রক্তচাপ স্বাভাবিক হচ্ছে। কিটোনের মাত্রাও কমেছে । ৩ থেকে কমে ১ হয়েছে। রবিবার রাত থেকে তাঁকে শক্ত খাবার দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁর শরীর দুর্বলই আছে। অন্য দিকে, অনুষ্টুপের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কালো মল আর হচ্ছে না। মলের রঙে খয়েরি ভাব রয়েছে। তাঁকে অল্প ফলের রস দেওয়া হয়েছে। এই ভাবে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাঁকে সাধারণ শয্যায় স্থানান্তরিত করার কথাও ভাবা হবে বলে জানান চিকিৎসকেরা।