Dilip Ghosh

Hiran-Dilip: একই শহরে তবু এক সঙ্গে নন, খড়্গপুরে দিলীপ-হিরণ দূরত্বে নয়া অস্বস্তি বিজেপি-র

পুরভোটের আবহে সাংসদ ও বিধায়কের মধ্যে ‘বিভাজন রেখা’ আবারও প্রকট হয়ে ওঠায় আলোচনা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৭:৫৩
Share:

পুরভোটের আবহে সাংসদ ও বিধায়কের মধ্যে ‘বিভাজন রেখা’ আবারও প্রকট হয়ে ওঠায় আলোচনা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে।

স্থানীয় সাংসদ দিলীপ ঘোষকে দূরে রেখে খড়্গপুর পুরনির্বাচনে অভিনেতা-বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখে তাঁকে প্রার্থী করেছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু ব্যাকস্টেজেই রয়েছেন ‘হিরো’! শনিবার খড়্গপুরে দিলীপের উদ্যোগে আয়োজিত বিজেপি-র সংকল্পপত্র প্রকাশের অনুষ্ঠানে দেখা মিলল না হিরণের। পুরভোটের আবহে সাংসদ ও বিধায়কের মধ্যে ‘বিভাজন রেখা’ আবারও প্রকট হয়ে ওঠায় আলোচনা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। যদিও একে নিছকই দাবি বলে উড়িয়ে দিয়েছে দুই পক্ষ।

Advertisement

বিগত কয়েক মাসে নানা কাজে মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপকে নিয়ে ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছিল খড়্গপুরের বিধায়ক হিরণের গলায়। প্রকাশ্যে রাস্তায় সংঘর্ষে জড়াতেও দেখা গিয়েছিল সাংসদ ও বিধায়কের অনুগামীদের। এর পরের গেরুয়া শিবিরের অন্দরে হোয়াট্সঅ্যাপ বিতর্কের আবহে দলের বিরুদ্ধে অনুযোগ প্রকাশ করে বিধায়কদের গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন হিরণ। কলকাতায় বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসেও কেন বাদ পড়তে হল, তা নিয়েও সেই সময় প্রশ্ন তোলেন তিনি। শুধু তাই নয়, দিলীপের ডাকা খড়্গপুর পুরভোটের প্রস্তুতি বৈঠকেও হাজির ছিলেন না হিরণ। তখন থেকেই দিলীপ-হিরণ সম্পর্ক চরমে পৌঁছে যাওয়া নিয়ে দলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়। তার পর বেশ কয়েক দিন হিরণের রেলশহরে ফিরে না আসা সেই জল্পনাকেই ‘বৈধতা’ দিয়েছে বলে দাবি রাজ্য বিজেপি-র এক নেতার।

পুরভোটের শুরুতে বিধায়ক হিরণকে যখন কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত দেখিয়েছিল, তখন একেবারে অন্য মেজাজে দেখা গিয়েছে ভূমিপুত্র দিলীপকে। সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে জনস‌ংযোগ করছেন তিনি। কম্বল বিতরণ করছেন। মণ্ডল ও বুথস্তরের কর্মীদের সঙ্গে পর পর বৈঠকে বসছেন। অন্য দিকে, আড়ালেই ছিলেন হিরণ। শনিবারও একই দৃশ্য দেখা গেল। দলের সংকল্পপত্র প্রকাশের অনুষ্ঠানে হিরণ হাজির না থাকায় তা নিয়ে দলের অন্দরেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বিজেপি-র তারকা-বিধায়ক অবশ্য কোনও রকম জল্পনা ও গুঞ্জনকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ। হিরণের কথায়, ‘‘মাননীয় শ্রদ্ধেয় সাংসদ তাঁর মহামূল্যবান সময় ব্যয় করে খড়্গপুর এসেছেন। বিজেপি-র সংকল্পপত্র প্রকাশের কর্মসূচি আয়োজন করেছে। তার জন্য খড়গপুরবাসী হিসেবে আমরা কৃতজ্ঞ। ওখানে আমার নির্বাচনী এজেন্ট প্রণবকুমার নন্দী উপস্থিত ছিলেন। এখানে জলঘোলার কোনও বিষয় নেই। মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’’

Advertisement

খড়্গপুরে বিজেপি-র সংকল্পপত্র প্রকাশের অনুষ্ঠানে দিলীপ বলেন, ‘‘বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে মানুষ বিজেপি-কে বেছে নিয়েছে। এ বার পুরসভা নির্বাচনেও বিজেপি জিতবে। বোর্ড গঠন করবে বিজেপি।’’ কিন্তু কর্মসূচিতে হিরণ কেন উপস্থিত নেই, সেই প্রশ্ন এড়িয়ে কার্যত এড়িয়ে গিয়েছে দিলীপ। তিনি শুধু বলেন, ‘‘হিরণ প্রচারেই আছেন। নিজেও প্রার্থী হয়েছেন।’’ হিরণও অবশ্য জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছেন তিনি। সাংসদ-বিধায়ক অন্তর্দ্বন্দ্বের জল্পনা এড়িয়ে গেলেও গেরুয়া শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, সংকল্পপত্র প্রকাশের মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির কথা জেনেও কেন ওই সময়েই বাড়ি বাড়ি প্রচারে বেরোলেন হিরণ?

দিলীপ-হিরণের মধ্যে ‘শীতল সম্পর্ক’ নিয়ে আগেও একাধিক বার খোঁচা দিয়েছিলেন খড়্গপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ সরকার। এ বারও তিনি বলেন, ‘‘এ আর নতুন কী! ওঁদের মধ্যে তো ঠান্ডা লড়াই চলছেই। হিরণ আর দিলীপ ঘোষকে খড়গপুরের মানুষ জিতিয়েছেন। উন্নয়ন কোথায়? শুধু তো লড়াই চলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement