mukul roy

Mukul Roy: মুকুলের দলবদল নিয়ে কী সিদ্ধান্ত, স্পিকারকে জানাতে বলল আদালত

আগামী ৭ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি। স্পিকারের তরফে কোনও জবাব না পেলে আদালতই এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৪১
Share:

ফাইল চিত্র।

দলত্যাগ-বিরোধী আইনে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান মুকুল রায়ের বিধায়ক-পদ খারিজের আবেদন সম্পর্কে স্পিকার কী পদক্ষেপ করেছেন, তা জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ৭ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি। স্পিকারের তরফে কোনও জবাব না পেলে আদালতই এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছে। তবে মামলার আবেদনকারী ওই নিয়োগের বিষয়টি যে ভাবে সাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয় বলেও আদালত জানিয়েছে।

Advertisement

বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রতীকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন মুকুল। তার পরে তিনি ফিরে যান তাঁর পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসে। বিধানসভায় পিএসি-র সদস্য হিসেবে বিজেপি যে ৬ বিধায়কের নাম সুপারিশ করেছিল, তার মধ্যে মুকুল ছিলেন না। পিএসি-তে তাঁর মনোনয়নের প্রস্তাবক ও সমর্থক ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও তৃণমূলের দুই বিধায়ক। যিনি বিজেপির বিধায়কই নন, তাঁকে কী ভাবে বিরোধী দলের প্রতিনিধি হিসেবে পিএসি-র মাথায় বসানো হল, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপি। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপির বিধায়ক ও আইনজীবী অম্বিকা রায়। হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছে, মুকুলের বিধায়ক-পদ খারিজের ব্যাপারে যে আবেদন স্পিকারের কাছে জমা পড়েছিল, সে ব্যাপারে তিনি কী পদক্ষেপ করেছেন, তা আদালতকে জানাতে হবে।

স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ দিন বলেছেন, ‘‘আদালতের রায় আমি দেখিনি। সংবিধান রয়েছে, বিধানসভার নিজস্ব আইন রয়েছে। আমরা সেইমতোই কাজ করব।’’ পরিষদীয় মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘বিধানসভার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্পিকারকে কেউ বাধ্য করতে পারে না।’’

Advertisement

বিরোধীদের দাবি, মুকুলের বিধায়ক-পদ নিয়েই যে প্রশ্ন আছে, তা মেনে নিয়েছে আদালত। তাঁর বিধায়ক-পদ খারিজ হয়ে গেলে পিএসি-র চেয়ারম্যানের পদ তাঁকে স্বাভাবিক ভাবেই ছাড়তে হবে। মুকুলের বিধায়ক-পদ খারিজের আর্জি নিয়েও হাই কোর্টে মামলা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আইনজীবী মহলের ধারণা, পিএসি-র মামলা এবং শুভেন্দুর আবেদনের ভবিষ্যতে একত্রে শুনানি হতে পারে।

শুভেন্দু এ দিন এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি। তবে বিরোধী দলনেতার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে বলা হচ্ছে, আদালতের এই হস্তক্ষেপের ফলে নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি হল। গত ১০ বছরে একের পর এক দলবদলের ঘটনার পরেও বিধানসভায় যে কোনও পদক্ষেপ হয়নি, এর পরে সেই ধারা বন্ধ হবে বলে তাঁরা আশাবাদী। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘এত দলবদল হয় যে, স্পিকারের পক্ষে মনে রাখাও হয়তো কঠিন! আদালত স্পিকার সম্পর্কে যে মনোভাব ব্যক্ত করেছে, সুস্থ, স্বাভাবিক সৌজন্যের গণতন্ত্র থাকলে তার পরে স্পিকার পদত্যাগ করতেন।’’ মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গ তুলে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগের অভিযোগে আবেদন রয়েছে, তাঁকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করে কার্যত স্পিকারের দফতর বুঝিয়ে দিয়েছে, দশম তফসিল ও সাংবিধানিক বিধি-ব্যবস্থাকে তাঁরা মান্যতা দেন না। জেনে-বুঝে দলত্যাগের প্রক্রিয়াকে কখনও স্পিকারের দফতর যদি প্রকারান্তরে সমর্থন করে বা পাশে থাকে, তার চেয়ে অপরাধ আর কিছু হয় না— এটা আদালত পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement