ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী রাজনৈতিক গোলমাল নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের রিপোর্ট চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী সোমবারের মধ্যে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের মাধ্যমে সেই রিপোর্ট পেশ করতে হবে। একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যে কোথায় কী ধরনের গোলমাল হয়েছে এবং পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, রিপোর্টে সেই সবই জানাতে হবে। মামলাটি প্রথমে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠলেও সেটির শুনানির জন্য পরে পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে বিশেষ বেঞ্চ গড়া হয়েছে।
ভোট-পরবর্তী অশান্তি নিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছেন অনিন্দ্যসুন্দর দাস নামে এক ব্যক্তি। শুনানির জন্য এ দিন প্রথমার্ধে বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে। কিন্তু মামলার বিষয়টি ‘জনগণের জীবন ও স্বাধীনতা সম্পর্কিত’ বলে শুনানির জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি-সহ পাঁচ জন বিচারপতিকে নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ গড়া হয়। বাকি সদস্যেরা হলেন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি হরিশ টন্ডন, বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি সুব্রত তালুকদার।
সম্প্রতি কোভিড-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়েছে হাই কোর্টে। ভ্যাকসিন, অক্সিজেনের সরবরাহের মতো মানুষের জীবন সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা চলছে। রাজনৈতিক হিংসা নিয়েও মামলা হয়েছে। কিন্তু পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ গড়ে শুনানি হাই কোর্টে সাম্প্রতিক অতীতে কার্যত নজিরবিহীন বলেই মত আইনজীবীদের। তাঁদের অনেকের অভিমত, প্রধান বিচারপতি মনে করলে দু’য়ের বেশি সদস্যকে নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ গড়তে পারেন।
মামলাকারীর তরফে আদালতকে বেশ কিছু গোলমালের কথা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, গোলমাল থামাতে পুলিশ কোনও সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে না। আদালত সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ করে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান, প্রশাসন সদর্থক চেষ্টাই চালাচ্ছে এবং হাঙ্গামাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ভোটের ফল ঘোষণার পরে রাজ্যের কিছু এলাকা থেকে গোলমালের খবর আসছিল। কিন্তু প্রশাসন তা বাড়তে দেয়নি। বরং পুলিশকে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছিল নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে গোলমাল থামাতে কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিছু এলাকায় মানুষ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে গোলমালের বিরোধিতা করছেন। স্বরাষ্ট্রসচিবের রিপোর্টে এ সব উল্লেখ থাকতে পারে বলে জানিয়েছে প্রশাসনিক সূত্র।