ফাইল ছবি
স্কুলে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। এ বার কলেজে গ্রন্থাগারিক (লাইব্রেরিয়ান) নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এক চাকরিপ্রার্থী। শান্তনু বসু নামে ওই ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় সম্প্রতি বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় কলেজ সার্ভিস কমিশনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন। সেই রিপোর্টে কী কী বিষয় উল্লেখ করতে হবে তা-ও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন বিচারপতি। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে কমিশনকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ২১ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।
শান্তনুবাবুর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, ২০১৯ সালে কলেজে গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগের ভিত্তিতে তাঁর মক্কেল আবেদন করেছিলেন। কিন্তু নির্দিষ্ট যোগ্যতা, পড়াশোনায় কৃতী হওয়া সত্ত্বেও শান্তনুবাবু চাকরি পাননি। অথচ নিয়োগ তালিকায় অন্তত ১০ জন এমন প্রার্থী রয়েছেন যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা যথেষ্ট নয়। তাঁদের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
মামলার শুনানিতে এই সব বিষয় কোর্টে তুলে ধরেন সুব্রতবাবু। যদিও কলেজ সার্ভিস কমিশনের কৌঁসুলি পাল্টা সওয়ালে সব অভিযোগ খারিজ করেন। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি কলেজ সার্ভিস কমিশনের কাছে রিপোর্ট তলব করেন। কোর্টের নির্দেশ, ওই ১০ জন প্রার্থীর কবে ইন্টারভিউ হয়েছিল তা রিপোর্টে জানাতে হবে। তার পাশাপাশি তাঁদের ঠিকানা এবং অন্যান্য বিষয়ক তথ্য দিতে হবে। প্যানেলের সব প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন কি না এবং সব শূন্য পদে নিয়োগ হয়েছে কি না, তা-ও কমিশনকে তাদের রিপোর্টে জানাতে হবে। এর পাশাপাশি সফল প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ে প্রাপ্ত নম্বর এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য প্রাপ্ত নম্বর রিপোর্টে উল্লেখ করতে হবে। শান্তনুবাবু ইন্টারভিউয়ে কত নম্বর পেয়েছিলেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য কত নম্বর পেয়েছিলেন তাও রিপোর্টে কমিশনকে জানাতে বলেছে কোর্ট।
প্রসঙ্গত, স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে ইন্টারভিউয়ের নম্বর প্রকাশের জেরেই বহু গরমিল ধরা পড়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরছেন অনেকে। ববিতা সরকার নামে এক চাকরিপ্রার্থীর মামলায় দেখা গিয়েছে, ববিতার প্রাপ্ত নম্বর অঙ্কিতার থেকে বেশি এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে অঙ্কিতার ইন্টারভিউয়ের কোনও নম্বরই নেই! তার ফলেই প্রশ্ন উঠেছে, অঙ্কিতা আদৌ ইন্টারভউ দিয়েছিলেন নাকি বিনা ইন্টারভিউয়ে মন্ত্রী-কন্যার নিয়োগ হয়েছিল? তবে এর পাশাপাশি অনেকে এ-ও বলছেন, কলেজে চাকরির ক্ষেত্রেও যে এমন হয়েছিল তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যায় না। কমিশনের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই সেই সব বিষয় স্পষ্ট হতে পারে।