রেল অবরোধের কারণে মালদহে আটকে পড়ার পর শেষ পর্যন্ত গাড়িতে শিলিগুড়ির সভাস্থলে রবিবার বিকেলে পৌঁছলেন বিমল গুরুং। তিনটের বদলে চারটের সময় তিনি বক্তব্য শুরু করেন। নিজস্ব চিত্র
তিনি এলেন।
দেখলেন।
কিন্তু পাহাড় আবার জয় করতে পারবেন কি? এর জবাব ভবিষ্যতে মিলবে।
তিন বছর পর প্রকাশ্য সভায় এসে বার্তা দিলেন, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই জেতাতে চান।
তিনি বিমল গুরুং। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান।
রেল অবরোধের কারণে মালদহে আটকে পড়ার পর শেষ পর্যন্ত গাড়িতে শিলিগুড়ির সভাস্থলে রবিবার বিকেলে পৌঁছলেন বিমল। কথা ছিল, তিনি তিনটে থেকে বক্তব্য রাখবেন। কিন্তু বক্তব্য রাখা শুরু হল প্রায় সাড়ে চারটের সময়। নিজের ভাষায় বক্তৃতায় ছিল পুরনো ঝাঁঝ। গুরুং বললেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেশি আসন জেতানোই এখন আমাদের লক্ষ্য।’’
গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের স্মৃতি উস্কে রবিবার মানুষের ঢল নেমেছিল শিলিগুড়ির গাঁধী ময়দানে। সকাল থেকেই ভিড় করেছিলেন মোর্চা সমর্থকরা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা সত্ত্বেও মাঠ সারা দিনই ছিল ভিড়ে ঠাসা। গুরুংয়ের আসতে দেরি হলেও সমর্থকরা মাঠ ছাড়েননি।
তিন বছর পর প্রকাশ্য সভায় স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে দেখা গেল গোর্খা নেতাকে। রবিবার তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য ছিল বিজেপি। বললেন, ‘‘কথা দিয়েও রাখেনি বিজেপি। এর জবাব দিতে হবে একুশের নির্বাচনে।’’ রবিবারের সভা়মঞ্চ থেকে একগুচ্ছ রাজনৈতিক কর্মসূচিও ঘোষণা করেন গুরুং। শীঘ্রই দার্জিলিং, কার্শিয়ং, কালিম্পং, মিরিকে জনসভা করবেন বলে তিনি ঘোষণা করেন।
বিমল প্রকাশ্যে আসায় পাহাড় রাজনীতিতে নতুন করে নড়াচড়া নজরে পড়ছে। সম্প্রতি বিনয় তামাং, অনীত থাপারা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও ভাবেই বিমলের সঙ্গে এক ছাতার তলায় তাঁরা যাবেন না। পাল্টা বিমলও বুঝিয়ে দিলেন, তিনি বিনয় শিবিরকে ছেড়ে কথা বলবেন না। রবিবার, বিনয়দের বিরুদ্ধে সরাসরি জিটিএ-র অর্থ নয়ছয় করার অভিযোগ করলেন। বললেন, ‘‘কী ভাবে খরচ হচ্ছে জিটিএর টাকা, তার উত্তর চাই। এর জবাব আমরা বুঝে নেব।’’
রবিবারের সভা ঘিরে শনিবার থেকে তেতে ছিল পাহাড়-সমতল। সকাল থেকেই সভাস্থলে দেখা যায় বিমল-অনুগামীদের ভিড়। তিন বছর বাদে ফিরে রবিবার নিজের শক্তির পরীক্ষা দেবেন বিমল, সেই কারণেই ওই সভার দিকে তাকিয়ে ছিল রাজ্য। সকাল থেকে দার্জিলিং-সহ অন্য অঞ্চল থেকে গাড়ি করে গুরুংপন্থীদের নেমে আসতে দেখা যায়। বিমলের আসতে দেরি হলেও ভিড় কিন্তু কমেনি সভায়।
সম্প্রতি মোর্চার গুরুংপন্থী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘বিনয় তামাং, অনীত থাপারা পাহাড়কে ধ্বংস করেছে। বিমল ফিরলেই পাহাড়ে উন্নয়ন হবে।’’
আরও পড়ুন : ২২-এ অর্থনীতি ফিরবে কোভিডের আগের অবস্থায়: নীতি আয়োগ
শুধু বিজোপি বিরোধিতা বা তৃণমূলকে সমর্থনই নয়, পাহাড়ে ক্ষমতা দখলের রোডম্যাপও রবিবারের সভা থেকেই তৈরি হতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন : ৯ বছর পর গ্রামে ফিরলেন সুশান্ত ঘোষ, নতুন করে উজ্জীবিত সিপিএম