রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (বাঁ দিকে) এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, রাজ্যের তরফে রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তাঁর যে কোনও আপত্তি নেই, তা-ও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ব্রাত্য। অন্য দিকে রাজ্যপালের ‘জুনিয়র’ কটাক্ষের জবাব ওই ‘জুনিয়র’ শব্দই ফিরিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে শুক্রবার ব্রাত্য জানান, তাঁর এই বিষয়ে কোনও ইগো নেই। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার উপাচার্য-মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টও রাজ্য এবং রাজ্যপালকে ব্যক্তিগত ইগো সরিয়ে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছে। রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনায় বসা নিয়ে ব্রাত্য বলেন, “অবশ্যই বসব। আমরা তো আলোচনাই করতে চাই। আমার তো মাননীয় আচার্যকে নিয়ে কোনও ইগো নেই।” উল্লেখ্য যে, রাজ্যপাল বোস পদাধিকার বলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য।
আইন জানার ক্ষেত্রে রাজ্যপালকে ‘জুনিয়র’ বলে কটাক্ষ করে ব্রাত্য বলেন, “উনি জুনিয়র হিসাবে কাজ করছেন। ওঁর কাজকর্মে ভুল থাকতেই পারে। আমরা তিন বারের জনপ্রতিনিধি। উনি যে কাজ শিখছেন, এটা দেখে ভাল লাগছে।” ঘটনাচক্রে, কিছু দিন আগেই ব্রাত্যের নাম না করেই তাঁকে কটাক্ষ করে রাজ্যপাল বলেছিলেন, “আমার যদি কিছু বলার থাকে বা কোনও কিছুর প্রয়োজন হয়, তা হলে আমার সংবিধানিক সহকর্মী মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, তার অধস্তন (জুনিয়র) সহকর্মীকে বলব না।’’
রাজ্যপাল আইন শিখছেন এমনটা দাবি করে ব্রাত্য জানান, রাজ্যপালের একতরফা ভাবে উপাচার্য নিয়োগের বিরুদ্ধে যে আবেদন তাঁরা আদালতে জানিয়েছিলেন, তাতে আদালত জানিয়েছে, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে রাজভবনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর পাশাপাশি, শিক্ষামন্ত্রী জানান, অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের বদলে রাজ্যের দাবি মোতাবেক, স্থায়ী অনুসন্ধান কমিটি গঠন করার কথা বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।
শুক্রবার স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজ্যের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট মৌখিক নির্দেশে জানায়, সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটির সদস্য মনোনয়নের জন্য রাজ্য, রাজ্যপাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)—তিন পক্ষকেই পাঁচটি নাম জানাতে বলেছে আদালত। সদস্যদের নাম জানার পর প্রত্যেক পক্ষ থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিয়ে তিন জনের সার্চ কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটিই স্থায়ী উপাচার্যের নাম প্রস্তাব করবে। রাজ্যপালের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে স্থগিতাদেশ চেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। অর্থাৎ, আপাতত রাজ্যপাল মনোনীত অস্থায়ী উপাচার্যেরা পদে বহাল থাকছেন।