ফাইল চিত্র।
রাজ্য সরকার লিঙ্গ নির্ধারণ সংক্রান্ত বিধিকে মান্যতা দিতে ‘ফান্ডামেন্টাল আলট্রাসনোগ্রাফি’ নিয়ে এমবিবিএস পাশ চিকিৎসকদের ছ’মাসের প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রম চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন কিছু মেডিক্যাল পড়ুয়া। ওই পাঠ্যক্রমের উপরে সাত দিনের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি শম্পা সরকার। তিনি রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছেন, ওই প্রশিক্ষণে ভর্তি ফি বাবদ ডাক্তারদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা আলাদা একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাখতে হবে।
হাইকোর্টের খবর, ১৬ জুলাই রাজ্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, ফান্ডামেন্টাল আলট্রাসনোগ্রাফির উপরে ছ’মাসের প্রশিক্ষণে আসন ২৬৮টি। সরকারি হাসপাতালের এমবিবিএস পাশ করা চিকিৎসকেরা সেই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। তার পরেই মামলা করেন ‘রেডিয়ো ডায়াগনোসিস’ নিয়ে এমডি পাঠরত ন’জন ছাত্র। তাঁদের কৌঁসুলি কল্লোল বসু, সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় ও শরণ্য চট্টোপাধ্যায় শনিবার জানান, ওই প্রশিক্ষণে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা এমসিআইয়ের অনুমোদন নেই। তাদের নির্দেশিকা অনুযায়ী এমন প্রশিক্ষণে যে-পরিকাঠমো দরকার, তা-ও নেই বঙ্গে।
মামলাকারীদের আশঙ্কা, তাঁরা তিন বছরের যে-স্নাতকোত্তর পাঠ নিচ্ছেন, সেই রেডিয়ো ডায়াগনোসিসের পরিকাঠামো ছ’মাসের প্রশিক্ষণ নিতে চাওয়া চিকিৎসকদের ব্যবহার করতে দেওয়া হবে। এর ফলে ব্যাঘাত ঘটবে মামলাকারীদের এমডি পঠনপাঠনে। নতুন পরিকাঠামো না-গড়ে ছ’মাসের প্রশিক্ষণ যুক্তিসঙ্গত নয়। যে-পাঠ্যক্রম তিন বছরের, তা ছ’মাসে করানো যায় না। যাঁরা ওই প্রশিক্ষণ নেবেন, তাঁদের সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই হবে বেশি।
শুক্রবার কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ইয়েডেজার্ড জাহাঙ্গির দস্তুর আদালতে জানান, এমসিআই ওই প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমকে বৈধতা দেয়নি। তাই মামলাকারীদের আবেদন অনুযায়ী ওই পাঠ্যক্রমের উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ প্রার্থনা করা হচ্ছে। কেন্দ্র হলফনামা দিতেও প্রস্তুত। দস্তুরকে সমর্থন করেন এমসিআইয়ের কৌঁসুলি ইন্দ্রনীল রায়।
বিচারপতি সরকার রাজ্যের আইনজীবী জিষ্ণু চৌধুরীকে নির্দেশ দেন, ওই প্রশিক্ষণ নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য ১ সেপ্টেম্বর জানাতে হবে। রাজ্য যদি প্রমাণ দিতে পারে যে, এই পাঠ্যক্রম আইনসম্মত, স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হবে না। বিচারপতি মামলাকারীদের নির্দেশ দেন, যাঁরা ওই প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়েছেন, তাঁরাও যাতে এই মামলায় যুক্ত হতে পারেন, সেই জন্য বিষয়টি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হবে।