কাজ: জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের কাছে চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র
রেলের একাংশের দাবি, সব ঠিক থাকলে শীঘ্রই একাধিক ট্রেন পেতে পারে হলদিবাড়ি ও জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন। সোমবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হলদিবাড়ি পর্যন্ত রেললাইন পরিদর্শন করেছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জীব রায়। রেল সূত্রের খবর, রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছেন, নতুন তিনটে ট্রেন পেতে চলেছে হলদিবাড়ি এবং জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন। তার মধ্যে হলদিবাড়ি থেকে দিল্লিগামী একটি ট্রেন ছাড়াও থাকতে পারে ডেমু-ও।
যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর দাবি, নতুন ট্রেনের কথা জেনারেল ম্যানেজারের ঘোষণা করার এক্তিয়ার নেই। তিনি বলেন, “রেল কর্তারা যেন বিজেপি নেতার মতো আচরণ না করেন!” তৃণমূলের কটাক্ষ, দার্জিলিং মেল তুলে দেওয়ার ক্ষতে প্রলেপ দিতে চাইছে রেল। হলদিবাড়ি থেকে প্রতিদিন স্লিপার কোচ এসে দার্জিলিং মেলের সঙ্গে জোড়ে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেটি উঠে যাচ্ছে বলে জানান হয়েছে রেলের তরফে।
হলদিবাড়ি থেকে দিল্লির ট্রেন চালালে রেলের আর্থিক মুনাফা হবে কিনা তারও সদুত্তর নেই রেল কর্তাদের কাছে। কত যাত্রী হবে তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। হলদিবাড়ি-কোচবিহার প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু হতে পারে বলে দাবি। তবে হলদিবাড়িতে তিস্তার উপরে সেতু হয়ে গেলে সেই প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কত চাহিদা থাকবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এছাড়া রাধিকাপুর পর্যন্ত একটি ডেমু ট্রেন চালানোর প্রস্তাব রয়েছে। সেই ট্রেনেও যাত্রী কতটা হবে তা নিয়ে কিছু বলতে পারেননি রেলকর্তারা। রেলের একটি অংশের দাবি, তিন রুটেই নতুন ট্রেনের পরিবর্তে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বর্তমানে যে ট্রেনগুলি চলে সেগুলিকেই হলদিবাড়ি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হতে পারে।
জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় সোমবার জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করেছেন। সেদিনই সাংসদ বলেন, “রেল নিয়ে একাধিক সুখবর অপেক্ষা করছে।” বিজেপি নেতারা আগেভাগে সুখবরের কথা কী করে ঘোষণা করছেন সে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, ভোটের দিকে তাকিয়েই রেলকে ব্যবহার করতে চাইছে বিজেপি।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রানিনগর পর্যন্ত লাইনের একটি অংশ দিয়ে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন যাতায়াত করে। রানিনগর থেকে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন হয়ে হলদিবাড়ি পর্যন্ত লাইনটিতে প্যাসেঞ্জার ট্রেন ছাড়া চলে তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস এবং হলদিবাড়ি সুপারফাস্ট। এই দু’টি ট্রেনও এই অংশটুকু প্যাসেঞ্জার ট্রেনের গতিবেগেই যাতায়াত করে। সম্প্রতি লাইনের সংস্কার হয়েছে। সোমবার বিশেষ ট্রেনে চেপে জেনারেল ম্যানেজার পরিদর্শন করেছেন। ওই ট্রেনের শেষ কামরাটি ছিল বিশেষ প্রযুক্তির পরিদর্শন রেক। রেকের একেবারে শেষ প্রান্তে কাচের বড় জানালার সামনে স্পিডোমিটার ও একাধিক মনিটর রয়েছে। সেখানে বসেই পুরো লাইনের কোথায় ট্রেনের কত গতিবেগ হওয়া সম্ভব, লাইনের খুঁটিনাটি পরীক্ষা করেছেন জেনারেল ম্যানেজার ও তাঁর সঙ্গে থাকা পরিদর্শনকারী দলটি।
রেল সূত্রের খবর আগে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন যাওয়ার ক্ষমতাবহন করতে পারত এই লাইন। সেই গতিবেগ বেড়ে এখন ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা হয়েছে। রেল সূত্রের দাবি, নতুন ট্রেন চলাচল করতে পারে তারজন্যই লাইনের বহনক্ষমতা বৃদ্ধি হয়েছে।