বৃহস্পতিবার অম্বেডকর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিধানসভায় যান রাজ্যপাল। অম্বেডকরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি। সেখানেই বুধবারের হাই কোর্টে অশান্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘বুধবারের ঘটনা অনভিপ্রেত। বিচারের মন্দিরে মানুষের মাথা হেঁট করা উচিত।’’
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগদীপ ধনখড় নিজস্ব চিত্র
বিআর অম্বেডকরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে নিয়ে হাই কোর্টের অশান্তি-সহ রাজ্যের একাধিক ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আবার সরব হলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার অম্বেডকর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিধানসভায় যান রাজ্যপাল। অম্বেডকরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি। সেখানেই বুধবারের হাই কোর্টে অশান্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘বুধবারের ঘটনা অনভিপ্রেত। বিচারের মন্দিরে মানুষের মাথা হেঁট করা উচিত।’’
রাজ্যপাল যখন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে একের পর এক তোপ দাগছেন, সেই সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। হাওড়া বিল নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে ধনখড় প্রশ্নটি বিধানসভার স্পিকারকে উত্তর দিতে বলেন। স্পিকার বলেন,‘‘এটা সাংবাদিক বৈঠক নয়। আমি রাজ্যপালকে অনুরোধ করব, ভিন্ন একটি অনুষ্ঠানকে আপনি সাংবাদিক বৈঠক বানিয়ে ফেলবেন না।’’ কিন্তু রাজ্যপাল তাঁর কথায় পাত্তা না দিয়েই সংবাদিকদের প্রশ্ন করতে বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরও দিতে থাকেন। তিনি সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘রাজ্যে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়েই চলেছে। মানুষ ভয় নিয়ে বেঁচে থাকে। গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার হয়ে উঠেছে বাংলা।’’ তাঁর মতে,‘‘বিচারের সময় রং দেখা উচিত নয়। দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত।’’
রামপুরহাট-কাণ্ডের পর পীড়িত ব্যক্তির পরিবারকে চাকরির আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘রামপুরহাটের ক্ষেত্রে মৃতদের পরিবারকে যদি চাকরি দেওয়া হয়, তবে ভোট পরবর্তী হিংসায় যাঁদের মৃত্যু হল, তাঁদের চাকরি দেওয়া হল না কেন?’’
রাজ্যপাল বেরিয়ে যাওয়ার পর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রত্যেকের নিজস্ব গণ্ডি রয়েছে। সেই গণ্ডি অনুযায়ীই কাজ করা উচিত। রাজ্যপাল অনেক কথা বললেন, যা পুরোপুরি সত্য নয়। আমরা সংবিধান মেনেই কাজ করি।”
প্রসঙ্গত, এই বিষয়গুলি নিয়ে আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবীদের মধ্যে গোলমাল এবং রাজ্যে নারী সুরক্ষা-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা করতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ধনখড়।
তবে, রাজ্যপালের আইনশৃঙ্খলা-সহ নানা বিষয়ে টুইট নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ বিজেপি-ও। রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আর টুইট দেখতে চাইছেন না বাংলার মানুষ, চাইছেন কিছু করুন। বাংলার মানুষ রাজ্যপালের দিকে তাকিয়ে, তিনি সংবিধানের রক্ষাকর্তা। মানুষ আর মতামত শুনতে চাইছেন না, চাইছেন তিনি করুন।’’ এই বক্তব্য যে রাজ্য বিজেপি-র তা বোঝা গিয়েছে যখন দিলীপ ঘোষও রাজ্যপালের টুইট নিয়ে একই মন্তব্য করেন।
তবে এই ঘটনা নতুন নয় এর আগেও অন্য অনুষ্ঠানে এসে সংবাদমাধ্যমের সামনে একাধিক বার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন তিনি।