জগদীপ ধনখড়।—ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জগদীপ ধনখড় প্রশাসনিক বিষয়ের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে বিশেষ ভাবে সক্রিয়। এ বার যাদবপুরের শিক্ষকদের দাবিদাওয়ার প্রশ্নেও তৎপর হলেন তিনি। নতুন বেতনহার নিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) দাবি ‘যথার্থ’ বলে রবিবার মান্যতা দিলেন আচার্য-রাজ্যপাল।
সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্য ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নতুন বেতন-কাঠামো বাংলার কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয়নি। তার প্রতিবাদে ১৯ ও ২০ নভেম্বর কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে জুটা। তা জেনে রবিবার সকালে সটান জুটা-র সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়কে ফোন করেন আচার্য। জুটা-র সম্পাদক বলেন, ‘‘আমাকে ফোন করে উনি বললেন, ‘ইউজিসি-র বেতন-কাঠামো নিয়ে আপনাদের কর্মবিরতির বিষয়টি জেনেছি। এটা যথার্থ দাবি’।’’
পার্থপ্রতিমবাবু জানান, এই বিষয়ে জুটা নেতাদের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। ওই জুটা নেতার দাবি, ‘‘আচার্য-রাজ্যপাল ফোনে বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে জুটা যে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে, তিনি তা জানেন। এটাও তাঁর জানা আছে যে, দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-সহ চারটি রাজ্য এই বেতনক্রম চালু করেনি।’’
জুটা-র সম্পাদকের দাবি, কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম দুইয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় (কলকাতা ও যাদবপুর)। এই পরিস্থিতিতেও যদি বেতনক্রম সংশোধিত না-হয়, সেটা ঠিক নয় বলে মত প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। ইউজিসি নতুন বেতন-কাঠামো ঠিক করে দিয়েছে দু’বছর আগে। বিভিন্ন রাজ্য সেটা চালু করে দিলেও পশ্চিমবঙ্গ এখনও করেনি।
বেতনক্রম সংশোধনের দাবি জানিয়ে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৃথক ভাবে চিঠি পাঠিয়েছে ওয়েবকুটা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (কুটা) এবং জুটা। তার পরেই এ দিন জুটা-র সম্পাদককে ফোন করেন রাজ্যপাল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ইনস্টিউটিউট অব এমিনেন্স’ সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকার যে এখনও তা রূপায়ণ করেনি, রাজ্যপালকে তা জানিয়েছেন পার্থপ্রতিমবাবু। সেই সঙ্গে জানান, সংগঠনের সকলের সঙ্গে বৈঠকের পরে তাঁরা রাজ্যপালের কাছে যাবেন।
নতুন বেতনহার চালু করার দাবি নিয়ে রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতারা গত শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু তাঁরা এই ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীর থেকে কাছ থেকে কোনও রকম ইতিবাচক আশ্বাস পাননি। তার পরেই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে জুটা। কেন তাঁরা কর্মবিরতি করছেন, তা অভিভাবকদেরও আগাম জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান জুটা নেতৃত্ব।