রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে প্রথম বার তৈরি মেডিক্যাল টুরিজ়ম বোর্ডের মান্যতা দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সরকারি সূত্রের খবর, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা (নং ২৭৩০-টিএম-১২/১৯/২০২০) জারি করেছেন রাজ্য পর্যটনদফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন। দু’বছর আগে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে এই বোর্ড গঠনের কাজ শুরু করেছিল রাজ্য। সাত সদস্যের বোর্ডও তৈরি হয়। করোনা-পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক কারণে বিষয়টি আর এগোয়নি। বোর্ড গঠনের পরে, তার মান্যতার জন্য রাজ্যপালের কাছে বিষয়টি পাঠানো হয়। যার অনুমোদন রাজ্যপাল দিয়েছেন বলে পর্যটনসচিব নির্দেশিকায় জানিয়েছেন।
আজ, রবিবার নতুন বছর শুরু হচ্ছে। এই জানুয়ারি মাসেই বোর্ডের প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা। রাজ্যের কোন প্রান্তে মেডিক্যাল টুরিজ়মের জন্য কী ধরনের পরিকাঠামো রয়েছে বা থাকা প্রয়োজন, তা নিয়ে আলোচনা হবে।
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি ক্ষেত্রেও বহু হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি ক্লিনিক, আধুনিক চিকিৎসা এবং পরীক্ষার আউটডোর ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের মতো দেশ থেকেও রাজ্যে প্রতিনিয়ত অনেকে চিকিৎসার জন্য আসছেন। তেমনই বিহার, ঝাড়খণ্ড, সিকিম, অসম, ওড়িশা থেকেও মানুষ আসছেন। এঁদের অনেকে চিকিৎসার পাশাপাশি এলাকায় ঘুরতেও আসেন। তার ভিত্তিতে হোটেল, রিসর্ট এবং লজের সংখ্যা নির্দিষ্ট শহরগুলিতে বেড়েই চলছে। এই পরিকাঠামো আরও বাড়ানোর দিকেও বোর্ড সরকারি স্তরে সুপারিশ করবে বলে দফতরের অফিসারের জানান।
পর্যটন দফতরের এক যুগ্ম সচিব বলেন, ‘‘রাজ্যে বহু অঞ্চলে ভারী শিল্প তৈরির পরিস্থিতি, পরিবেশ বা পরিকাঠামো নেই। সেখানে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ক্ষেত্র ভাল বাড়ছে। পাহাড়ি অঞ্চলে এর অনেক সুযোগ তৈরি হচ্ছে। নতুন বোর্ড সেই সব দিকে নজর রেখে প্রকল্পের প্রস্তাব দেবে।’’
দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ ভারতের মতো ‘ওয়েলনেস সেন্টার’ বা মে়ডিক্যাল-পর্যটন জনপ্রিয় করার কথাও দফতরে আলোচনা হয়েছে। ‘ওয়েলনেস সেন্টার’-এ যোগ, ম্যাসাজ, নেচারোপ্যাথির ব্যবস্থা থাকে। সরকারি স্তরে এ রাজ্যেও তা তৈরির চিন্তাভাবনা রয়েছে।
নতুন বোর্ডের মাথায় যুগ্ম সচিব পর্যায়ের অফিসারকে রাখা হয়েছে। তা ছাড়া, পর্যটন উন্নয়ন নিগমের জেনারেল ম্যানেজার, স্বাস্থ্য দফতর, পর্যটন দফতর এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক জন করে সহকারি সচিব, বণিকসভা ‘সিআইআই’-এর সদস্য, পর্যটন সংগঠনের প্রতিনিধিকে রাখা হয়েছে।
তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, দক্ষিণ ভারতের মতো চিকিৎসা এবং শুশ্রূষা ব্যবস্থা মিলবে কি রাজ্যে? প্রশাসনিক স্তরে এখনই এই নিয়ে কিছু বলতে চাওয়া হয়নি।