Haimanti Ganguly

কোন মেয়ে সঙ্গে থাকবে এত বার জেলে গেলে? হৈমন্তীর সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে নিজেকেই দুষছেন গোপাল

কী কারণে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ? গোপাল জানিয়েছেন, ঝামেলার সূত্রপাত আগেই হয়েছে, ২০১৮ সালে। অতীতে চিটফান্ডকাণ্ডেও নাম জড়িয়েছিল গোপালের। দিল্লির তিহাড় জেলে ছিলেন। সেই কারণে দাম্পত্যে ভাঙন!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:০২
Share:

গোপাল (ডান দিকে) জানিয়েছেন, হৈমন্তীর (বাঁ দিকে) সঙ্গে থাকেন না তিনি। আলাদা থাকেন। — ফাইল ছবি।

নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তাঁদের। হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায় এবং গোপাল দলপতির মধ্যে সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। গোপাল যদিও জানিয়েছেন, হৈমন্তীর সঙ্গে তিনি থাকেন না। আলাদা থাকেন। এ জন্য হৈমন্তী নন, নিজেকেই দায়ী করছেন গোপাল। তাঁর কথায়, ‘‘কোন মেয়ে থাকবে আমার সঙ্গে?’’ আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলার সময়ে বার বার জানিয়েছেন, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী ‘নিরপরাধ’।

Advertisement

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষ প্রথম নাম করেছিলেন তাপস মণ্ডলের। দাবি করেছিলেন, এই কাণ্ডের ‘আসল লোক’ তাপসই। পরে সেই কুন্তলই নাম নেন হৈমন্তীর। দাবি করেন, হৈমন্তী আদতে গোপালের স্ত্রী। তাঁর কাছেই রয়েছে সব টাকা। এর পর থেকেই নজরে হৈমন্তীর ভূমিকা। শনিবার গোপাল আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, হৈমন্তী তাঁর স্ত্রী ছিলেন। গোপালের কথায়, ‘‘আমরা সেপারেশনে রয়েছি। ডিভোর্সের মামলা হয়ে গিয়েছে। তবে সার্টিফিকেট আসেনি।’’

কী কারণে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ? গোপাল জানিয়েছেন, এই ঝামেলার সূত্রপাত আগেই হয়েছে, ২০১৮ সালে। অতীতে চিটফান্ডকাণ্ডেও নাম জড়িয়েছিল গোপালের। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল, চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দিল্লির তিহাড় জেলেও ছিলেন গোপাল। ঠিক সেই কারণেই দাম্পত্যে ভাঙন বলে দাবি গোপালের। তাঁর কথায়, ‘‘এখন থেকে তো হয়নি। ২০১৮ থেকে। কোম্পানির কেসের কারণ বার বার জেলে যেতে হচ্ছিল। কোনও মেয়ে থাকবে কারও সঙ্গে? বলবে, তুই থাক, আমি যাই।’’

Advertisement

দাম্পত্যে এই ভাঙনের জন্য নিজেকেই দায়ী করেছেন গোপাল। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডেও যে হৈমন্তীর নাম জড়িয়েছে, তার জন্যও নিজেকে দায়ী করছেন গোপাল। তাঁর কথায়, ‘‘আমার জন্যই হচ্ছে। এটাই ঘটনা। আমার স্ত্রী বলেই হচ্ছে। এর জন্য আমিই পুরো দায়ী।’’

তবে কি নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়ে কিছুই জানেন না হৈমন্তী? গোপাল তেমনটাই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতির ২০০০ মাইল পর্যন্ত ওঁর কোনও যোগ নেই। ও জানেই না, এটা খায়, না মাথায় দেয়! ভালবেসে বিয়ে করেছিল। আমি ওর বিশ্বাসের অমর্যাদা করেছি।’’

গোপাল এই দাবি করলেও একটি সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবে দু’জনের নামই রয়েছে। সেই সংস্থার নামও হৈমন্তীর নামে— হৈমন্তী অ্যাগ্রো লিমিটেড। সবই কি হৈমন্তীর অজান্তে? গোপাল বলেন, ‘‘যেখানে সই করতে বলেছি, ও সই করেছে। বিশ্বাস করেছে। একটা নিষ্পাপ মেয়েকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে। যাঁরা করেছেন, তাঁদের উপরওয়ালা শাস্তি দেবেন।’’ আর হৈমন্তীর নামে সংস্থা প্রসঙ্গে গোপাল বলেন, ‘‘সংস্থাটি কেবল তৈরি হয়েছিল। আর কোনও কাজ হয়নি।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, নিজের সংস্থায় স্ত্রীকে শেয়ার দেবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা-ও দেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘কোম্পানির আবেদনের ফর্ম যেটা মিলেছে, ভেবেছিলাম একটা শেয়ার দেওয়া হবে। কিন্তু আর দেওয়া হয়নি।’’

বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও হৈমন্তীর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গিয়েছে গোপালের অ্যাকাউন্টে। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে গোপাল মেনে নিয়েছেন সে কথা। তিনি বলেন, ‘‘আমি ভিখারি হয়ে গিয়েছি। বিবাহিত জীবন। আলাদা থাকি, তা বলে কি মারপিট করব? ঝগড়া করব? আলাদা থাকতেই পারে। ওর জীবন রয়েছে, আমার জীবন রয়েছে। বিপদের দিন এলে, আমি যাব না? আমার আর্থিক অসুবিধা হলেও আমি চাইতে পারি। আমার পয়সাকড়ি নেই। চেয়েছি। সাহায্য করেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement