ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আবার জিতল এটিকে মোহনবাগান। ফাইল ছবি
এটিকে মোহনবাগান ২ (স্লাভকো, দিমিত্রি)
ইস্টবেঙ্গল ০
অঘটন হল না। আইএসএলে এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে টানা ছ’টি ম্যাচে হারল ইস্টবেঙ্গল। গত পাঁচ বারের তুলনায় অনেক ভাল ফুটবল খেলেও জয় অধরা থাকল লাল-হলুদের। শনিবারের কলকাতা ডার্বিতে মোহনবাগান জিতল এমন দু’জনের গোলে, যাঁরা প্রথম বার কলকাতা ডার্বি খেলতে নেমেছিলেন। কার্ড সমস্যায় ডার্বি থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন ব্রেন্ডন হ্যামিল। তাঁর জায়গায় খেলা স্লাভকো দামিয়ানোভিচ গোল করলেন। ম্যাচের শেষ দিকে গোল দিমিত্রি পেত্রাতোসের। সব সাক্ষাৎ মিলিয়ে টানা অষ্টম জয় মোহনবাগানের।
যে ছ’টি কলকাতা ডার্বি দেখা গেল আইএসএলে, তার মধ্যে এই ডার্বিতেই ইস্টবেঙ্গলকে কিছুটা হলেও তুলনার মধ্যে রেখেছিলেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। আগের ম্যাচ লিগ শিল্ড জয়ী মুম্বই সিটিকে হারানোর পর আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ছিল তাদের। কিন্তু ডার্বি আসতেই সেই আত্মবিশ্বাস মিলিয়ে গেল। তবে হারলেও এটা বলাই যায়, লাল-হলুদ মোটেও খারাপ খেলেনি। ফুটবলাররা নিজেদের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে এই ম্যাচ জিততে না পারলেও, ড্র করতে পারত। সেটাও হল না। ভাল সুযোগ নষ্ট করলেন ভিপি সুহের। নাওরেম মহেশের সামনেও সুযোগ ছিল গোল করার। কিন্তু হয়নি।
আগের দিন এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো বলেছিলেন, চোটের কারণে হুগো বুমোস অনিশ্চিত। অথচ শনিবার প্রথম একাদশে দেখা গেল বুমোসকে। তার ইঙ্গিত অবশ্য আগেই পাওয়া গিয়েছিল। শুক্রবার বিকেলে পুরোদমে অনুশীলন করেছিলেন বুমোস। তবে কার্ল ম্যাকহিউকে না পাওয়ায় মোহনবাগানের মাঝ মাঠ নিয়ে একটা চিন্তা ছিলই। ইস্টবেঙ্গল এ দিন অপরিবর্তিত দল নামায়।
শুরুটা ভাল করে মোহনবাগানই। প্রথম পাঁচ মিনিটে পাসিং, বল নিয়ন্ত্রণ, সবই ছিল তাদের দখলে। খেলার বিপরীতে সাত মিনিটের মাথায় একটি ফ্রিকিক পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু মোবাশিরের ফ্রিকিকের নাগাল পাননি তাঁর দলের কোনও ফুটবলার। ১২ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে আশিককে ফাউল করেছিলেন লালচুংনুঙ্গা। দিমিত্রি পেত্রাতোসের জোরালো ফ্রিকিক অল্পের জন্য বারের উপর দিয়ে উড়ে যায়।
এর কিছু ক্ষণ পরেই গোলের সুযোগ চলে আসে ইস্টবেঙ্গলের সামনে। মাঝ মাঠ থেকে মোবাশিরের দুর্দান্ত পাস পেয়েছিলেন ভিপি সুহের। বল নিয়ে খানিকটা এগিয়েও যান। কিন্তু গোল করার আগের মুহূর্তে পা পিছলে পড়ে যান। অনায়াসে প্রীতম কোটাল বল ক্লিয়া করে দেন। প্রথম থেকে কিছুটা পিছিয়ে থাকার পর ধীরে ধীরে খেলায় পাল্টা দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিল ইস্টবেঙ্গল। মাঝে মাঝেই প্রতি আক্রমণে উঠছিল তারা। তবে কিছু ভুলের কারণে গোলের মুখ খুলতে পারেনি।
৩০ মিনিটের মাথায় লাল-হলুদ আরও একটি সুযোগ পায়। ডান দিক থেকে দারুণ ভাবে বল নিয়ে ওঠেন সুহের। তাঁর পাস থেকে মহেশের চলতি বলে শট বারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। বিরতির ঠিক আগে কর্নার বাঁচাতে যাওয়ার সময় ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারের হাতে বল লাগে। কিন্তু মোহনবাগানের আবেদনে কর্ণপাত করেননি রেফারি।
দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুটা ভাল করে এটিকে মোহনবাগান। প্রথম থেকেই ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের উপর চাপ বাড়াতে থাকে তারা। ৫২ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত মোহনবাগান। অল্পের জন্য এগোতে পারেনি। ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে বাঁ দিক থেকে উঠে এসে আশিক পাস বাড়িয়েছিলেন পেত্রাতোসকে। অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের শট বার ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। এর পর বেশ কিছু ক্ষণ দু’দলের কোনও আক্রমণাত্মক মুভ দেখা যায়নি। তবে যোগ্য দল হিসাবেই এগিয়ে যায় মোহনবাগান।
৬৮ মিনিটে গোল করেন আবার সেই ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের ভুল। বাঁকানো কর্নার করেছিলেন পেত্রাতোস। মনবীর সিংহ ব্যাক হিল গোলের দিকে পাঠান। স্লাভকোর হেড প্রথমে বারে লাগে। ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন তিনিই। ম্যাচের শেষ দিকে দ্বিতীয় গোল করেন দিমিত্রি। ইস্টবেঙ্গলের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল করলেন অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার।