এখনও অধরা জোড়া খুনে মুখ্য অভিযুক্ত ভিকি। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
গত রবিবার গড়িয়াহাটে খুন হন কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকী ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডল। ঠিক এক সপ্তাহ পর, কোথায় দাঁড়িয়ে তদন্ত? ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে মিঠু হালদার-সহ তিন জন। কিন্তু অধরা মূল অভিযুক্ত ভিকি। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
এরই মধ্যে তদন্তে উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। লালবাজার সূত্রে খবর, গত রবিবার খুনের ঘটনা ঘটায় মোট পাঁচ জন। তার মধ্যে ভিকির মা মিঠু জোগাড় করেছিলেন তিন জনকে। ভিকির সঙ্গে এসেছিলেন এক জন। পুলিশ সূত্রে খবর, এই কাজের জন্য মিঠু ৫০ হাজার টাকা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর এখানেই দানা বেঁধেছে রহস্য।
বাড়ি দেখার নাম করে সুবীরকে ডেকে আনা হয়েছিল কাঁকুলিয়া রোডে তাঁর বাড়িতে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, সম্ভাব্য খদ্দেরকে বাড়ি দেখাতে যে পকেট ভরে টাকা আনবেন না সুবীর, সে তো জানা কথা। উদ্দেশ্য যদি হয় লুঠ করা, তা হলে সেই সময় কেন বেছে নেওয়া হল? পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের পর খুব বেশি টাকা পয়সাও পাননি ভিকিরা। তা হলে খুনের কারণ কী? মিঠু কোন ভরসায় ৫০ হাজার টাকা দিয়ে খুনি ভাড়া করলেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
ঘটনার পর এক সপ্তাহ ধরে লাগাতার তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, হিসেব কষে পুলিশকে ধোঁকা দেওয়ার পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন ভিকি। তদন্তের শুরুতে পুলিশ কুকুর নামিয়েছিল লালবাজার। সেই কুকুর কাঁকুলিয়া রোড থেকে দৌড়তে দৌড়তে পৌঁছে গিয়েছিল বালিগঞ্জ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে। তা দেখে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের মনে হয়েছিল, হয়তো ট্রেনে করে পালিয়েছে আততায়ী। কিন্তু জোড়া খুনের তদন্তের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ সবই আসলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে অপরাধপ্রবণ ভিকির ছলাকলা। তদন্তকারীদের নজর ঘোরাতেই খুনের পর ভিকিরা প্রথমে যান বালিগঞ্জ স্টেশন। কিন্তু তাঁরা ট্রেন ধরেননি। উল্টে দুই দলে ভাগ হয়ে বালিগঞ্জ স্টেশন থেকেই দু’দিকে চলে যান। তদন্তকারীদের অনুমান, ভিকি এবং আরও একজন স্টেশনের ভিতরের রাস্তা দিয়ে চলে যান কসবার দিকে। অপর দলটি বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে চলে আসে গ়ড়িয়াহাটের দিকে।
তা হলে কি পুলিশি তদন্তকে ভুল পথে চালাতে আরও কোনও ছক কষে রেখেছে ভিকি? তদন্তকারীরা বলছেন, ভিকি ধরা পড়লেই স্পষ্ট হবে গত রবিবারের সম্পূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ।