বাঁ দিকে, সল্টলেকের অফিসে এই যন্ত্রেরই হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ডান দিকে, আমির খান। নিজস্ব চিত্র।
অনলাইনে গেমিং অ্যাপে প্রতারণা-কাণ্ডে বিদেশ যোগের সূত্র পেল কলকাতা পুলিশ। দুবাই থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রতারণার কারবার চালানো হত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এই কারবারে গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী আমির খানের পাশাপাশি আরও এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। তিনি শুভজিৎ শ্রীমানি। ওই ব্যক্তি দুবাইয়ে থাকেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
বুধবার সল্টলেকের একটি অফিসে হানা দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। সেখানে গিয়েই চোখ কপালে ওঠে আধিকারিকদের। অফিসে কোনও লোক নেই। অথচ সার্ভার, কম্পিউটার চালু রয়েছে। অর্থাৎ, সব কিছুই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে হচ্ছে।
সল্টলেকের ওই অফিসে সার্ভার রুমের হদিস পায় পুলিশ। যেখানে সিম বক্সের মতো একটি যন্ত্র দেখতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের দাবি, ওই যন্ত্রে ১৯০০-এর বেশি সিম রাখা ছিল, যেগুলি আমিরের অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে যুক্ত। ওই সিমগুলির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় (অটোমেটিক) ওটিপি দিয়ে অ্যাকাউন্টগুলি চালু করা হত বলেও দাবি।
এই প্রতারণা কারবারের তদন্তে নেমে বুধবার কলকাতার একাধিক জায়গায় পৃথক ভাবে অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (ইডি)। উত্তর কলকাতার বিকে পাল অ্যাভিনিউ থেকে দক্ষিণের বেহালা-সহ পাঁচটি জায়গায় অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি সূত্রের খবর, অনলাইন গেমিং অ্যাপের প্রতারণা-কাণ্ডে আমিরের দু’শোর বেশি অ্যাকাউন্ট ভুয়ো নামে যুক্ত থাকতে পারে বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ।
এর আগে, গার্ডেনরিচে আমিরের বাড়িতে খাটের তলা থেকে ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এর পর আমিরের ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং বিটকয়েন হিসাবে ব্যবহৃত ১২ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকাও বাজেয়াপ্ত করল ইডি। প্রথমে ফেরার থাকলেও গত সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে আমিরকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, বেআইনি টাকা বিদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ‘কনভার্ট’ করে রেখেছিলেন আমির। এই প্রেক্ষাপটে তদন্তে নেমে শুভজিৎ নামে এক ব্যক্তির যে ভাবে যোগ খুঁজে পেল পুলিশ, তাতে এই প্রতারণা চক্রের জাল আরও গভীরে ছড়িয়ে রয়েছে বলে অনুমান।