সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে দুর্নীতি এবং অপশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে লড়াই আরও জোরালো করার কথা বললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। কার্যত একই সুরে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং যোগ্য চাকরি-প্রার্থীদের নিয়োগের দাবিতে সংগঠিত গণ-আন্দোলনই পথ। তৃণমূলের ‘অপশাসনে’র জবাব বিজেপির ‘নৈরাজ্য’ হতে পারে না।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বুধবার দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রশ্নে সারদা ও নারদ-কাণ্ডের উদাহরণ টেনে সেলিম বলেছেন, গত কয়েক বছরে কেন্দ্রীয় সংস্থার এই ধরনের তদন্ত মাঝপথে শ্লথ হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তদের কেউ কেউ তৃণমূল থেকে দল বদল করে বিজেপিতে গিয়েছেন। এ বার এই দুর্নীতির ‘শেষ’ দেখার জন্য লড়াই চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সেলিম। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের কথায়, ‘‘গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থাটাকে দুর্নীতির মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বারেবারেই আমরা দেখেছি, সিবিআই বা ইডি কিছু সন্দেহের আঙুল তুলে থেমে যায়! এই গোটা ব্যবস্থার শেষ বিন্দুতে কারা আছে, সেই পর্যন্ত যেতে হবে। আমরা আদালতে তা-ই বলছি, মানুষকেও সেটাই বলছি।’’ তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে ‘প্রতারণা’র বিষয়কে সামনে রেখে আন্দোলন আরও তীব্র করার কথা বলেছেন তিনি।
কলকাতায় লিবারেশনের রাজ্য কমিটির বৈঠকের পরে এ দিন দীপঙ্করবাবুও বলেছেন, বাংলায় এখন বেশি সংখ্যায় সাধারণ মানুষ আন্দোলনমুখী হচ্ছেন। বিজেপি প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে আবার দুর্নীতি ও অপশাসন সামনে আসার সুযোগ নিয়ে তারা ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টাও করছে বলে তাঁর দাবি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের অপশাসনের জবাব দিতে হবে সংগঠিত গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে। এই গণ-আন্দোলনের মাধ্যমেই বামপন্থীরা এ রাজ্যে আবার সামনের সারিতে উঠে আসবে, এটা আমরা আশা রাখি। প্রশ্নটা শুধু দুর্নীতিরই নয়, চাকরি-প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের দাবি এখনও প্রধান।’’ দুর্নীতি, অপশাসন, সন্ত্রাস এবং অন্য দিকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে সব বামপন্থী দল ও ব্যক্তিবর্গকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন দীপঙ্করবাবু।
তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তাপস রায় অবশ্য মন্তব্য করেছেন, ‘‘সিপিএম হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার জন্য এ সব কথা বলে বসে যাওয়া দলকে চাঙ্গা করতে চায়। আন্দোলন করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু যে অতীত রেখে গিয়েছে, তার পরে আর মানুষ ওদের কাছে ফিরবে না।’’