ধৃত চার, অজানা খুনের কারণই!

ধন্দ বাড়ছে সতীশের পরিবারের প্রকাশ্যে আসা নিয়ে। সংবাদমাধ্যমকে যেমন তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি, তেমনই বুধবার রাত পর্যন্ত তদন্তকারীরাও তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৩
Share:

—প্রতীকী ছবি

ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে তিন-তিনটে দিন। ‘সাফল্য’ হিসেবে পুলিশের ঝুলিতে চার জন অভিযুক্ত। তার পরেও খুনের ‘মোটিভ’ হাতড়ে বেড়াচ্ছে পুলিশ!

Advertisement

টিটাগড়ে সতীশ মিশ্র খুনের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা ক্রমেই বাড়ছে। যে ভাবে পুলিশি তদন্ত এগোচ্ছে, তাতে তৃণমূলের একটি অংশ খুশি হলেও আর একটি অংশ মনে করছে, তদন্ত ঠিক পথে নেই। কেন? উত্তরে উঠে আসছে খুনের কারণ ছুঁতে না পারার প্রসঙ্গ। সব মহলেই প্রশ্ন উঠছে, অভিযুক্তদের ধরেও কেন কারণের নাগাল পাচ্ছে না পুলিশ?

ধন্দ বাড়ছে সতীশের পরিবারের প্রকাশ্যে আসা নিয়ে। সংবাদমাধ্যমকে যেমন তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি, তেমনই বুধবার রাত পর্যন্ত তদন্তকারীরাও তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (‌জোন ১) কে কান্ননের বক্তব্য, ‘‘সতীশের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তাঁদের অভিযোগ থাকলে তা নথিভুক্ত করা হবে।’’

Advertisement

সোমবার দুপুরে গুলিবিদ্ধ হন সতীশ। সে দিনই বিকেলে পুলিশ গ্রেফতার করে মূল অভিযুক্ত ভোলা প্রসাদ এবং কালা মুন্নাকে। তাদের জেরা করে রাতে ধরা হয় আরও দুই অভিযুক্ত শেখ সমীর এবং সঞ্জয় দাসকে। পুলিশ প্রথমে বলেছিল, সমীর এবং সঞ্জয়ই সুপারি নিয়ে সতীশকে গুলি করে। কিন্তু তাদের হাতে পেয়েও পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিল না কেন? উঠছে প্রশ্ন।

পুলিশের আরও বক্তব্য, জেলে অভিযুক্তদের শনাক্তকরণ হবে বলে তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়নি। যা নিয়েও দেখা দিয়েছে বিতর্ক। কারণ, আইন অনুযায়ী কোথাও বলা নেই, গ্রেফতারির পরেই টিআই প্যারেড করতে হবে। প্রয়োজনে তা পরেও করা যেতে পারত।

পুলিশের একটি মহলের বক্তব্য, ভোলার থেকে সুপারি নিয়ে সমীর এবং সঞ্জয় খুন করে থাকলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা সব থেকে আগে দরকার। সে ক্ষেত্রে পুলিশকে ওই দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে নিতে হত। কিন্তু তারা সেই পথে না যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে সব মহলেই। সতীশের বাড়িই বা কেন দুর্ভেদ্য করে তোলা হচ্ছে, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে বিস্ময়।

প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা সতীশের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন, তাঁরা কারা? এলাকা সূত্রে খবর, তাঁরা তৃণমূলের কর্মী। যদিও মণীশের দাবি, ‘‘যাঁরা বাধা দিয়েছিলেন, তাঁরা দলের কেউ নন। হয়তো শোকের পরিবেশে পাড়ার কেউ ঢুকতে দেননি। তবে চাইলে ওর বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলানোর ব্যবস্থা করে দেব।’’

একটি কারখানায় সামান্য বেতনে চাকরি করা, শিক্ষিত যুবক সতীশকে কেন খুন করার প্রয়োজন পড়ল? সতীশ ছিলেন মণীশের ডান হাত। তৃণমূলের একটি অংশ এবং মণীশ নিজেও মনে করছেন, তাঁকে দুর্বল করতেই সরানো হয়েছে সতীশকে। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, ধীরে ধীরে এলাকায় নিজস্ব পরিচিতি তৈরি হচ্ছিল সতীশের। সেটাই কি কাল হল তাঁর? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সতীশের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement