জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
প্রবল দাবদাহের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। শনিবার দুপুরে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন এই রাজনীতিক। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন তিনি। জেল সূত্রে খবর, শনিবার দুপুরে আচমকা অসুস্থ বোধ করতে থাকেন জ্যোতিপ্রিয়। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ডেকে পাঠানো হয় জেলের চিকিৎসকদের। এমনিতেই সুগার এবং প্রেশার জনিত সমস্যায় দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছেন তিনি। তার উপর অত্যধিক গরমে তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয় বলেই জেল সূত্রে খবর। প্রাথমিক ভাবে শারীরিক পরীক্ষা করার পর, প্রেসিডেন্সি জেল হাসপাতালের মেডিসিন, ডায়াবেটিক এবং কার্ডিয়োলজিস্ট চিকিৎসকদের ডেকে পাঠানো হয়। দিনভর চিকিৎসার পর রাতের দিকে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় প্রাক্তন মন্ত্রীর। জেলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অত্যধিক গরমের কারণে প্রাক্তন মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়েছিল।
প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রের খবর, জেল হাসপাতালে চিকিৎসকেরা আপাতত কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখবেন জ্যোতিপ্রিয়কে। তাঁর পরিবারকে শারীরিক অসুস্থতা এবং পরে সুস্থ হয়ে ওঠার কথা জানানো হয়েছে জেলের তরফ থেকে। ২৬ অক্টোবর রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গভীর রাতে গ্রেফতার হন তিনি। পরদিন আদালতে পেশ করা হলে তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানে শুনানি চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন বালু। তার পরেই তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কয়েক দিন পরে হাসপাতাল থেকে ইডির হেফাজতে ফেরানো হয় তাঁকে। জেলে অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত বছর নভেম্বর মাসে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বনমন্ত্রীকে। তার পর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন। এ বছর ১৩ জানুয়ারি এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে ফেরানো হয় জ্যোতিপ্রিয়কে। তবে এ বারের অসুস্থতায় তাঁকে এখনই বাইরের হাসপাতালে পাঠানো হবে না বলেই জেল সূত্রে খবর।
শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তাঁর পরিবার একাধিক বার আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু এখনও জ্যোতিপ্রিয়ের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেনি আদালত। ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয়েছে। তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জামিন পেতেই তাঁর পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জ্যোতিপ্রিয়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনে সারা দিয়েই ফেব্রুয়ারি মাসে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়কে। কিন্তু এখনও জামিন মেলেনি। প্রসঙ্গত, জ্যোতিপ্রিয় রাজনীতিতে আসার পর এই প্রথম কোনও নির্বাচন হচ্ছে, যেখানে তিনি নেই। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতি করা জ্যোতিপ্রিয় তাই জেলে বসেই অনুতাপ করছেন বলেও জানা যায়। তৃণমূল গঠনের পর তাঁর চোখ দিয়েই উত্তর ২৪ পরগনার রাজনীতিকে দেখতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অনুপস্থিতিতে হাবড়া বিধানসভায় ভোট পরিচালনার জন্য একটি কমিটিও গঠন করেছে তৃণমূল। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বালুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ১৯ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। যদিও, ২০২১ সালে ওই বিধানসভা কেন্দ্রেই মসৃণ জয় পেয়েছিলেন তিনি।