অবশেষে কাবু ষাঁড়। —নিজস্ব চিত্র।
হাতি, বাইসন বা চিতাবাঘের মতো কোনও বন্যপ্রাণী নয়। টানা দু’মাস ধরে একটি ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল ধূপগুড়ির কলেজ পাড়া এলাকায়। অবশেষে ঘুমপাড়ানি গুলি করে কাবু করতে হল ওই ষাঁড়টিকে। তবে সে কাজটিও সহজসাধ্য ছিল না। রবিবার প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় ওই ষাঁড়টিকে কাবু করে বন দফতর। বন দফতরের দাবি, রাজ্যে এই প্রথম কোনও গৃহপালিত প্রাণীকে ঘুমপাড়ানি গুলি করতে হল।
বন দফতর সূত্রে খবর, টানা দু’মাস ধরে ওই ষাঁড়ের তাণ্ডবে আহত হয়েছেন আট জন গ্রামবাসী। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁরা চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া, অন্তত ২০টিরও বেশি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই ষাঁড়ের তাণ্ডবে। নষ্ট হয়েছে ফসলও। যদিও ষাঁড়টি পাগল নয়। তবে তার পাশ দিয়ে মানুষজন গেলেই তেড়ে যাচ্ছিল সেটি।
সূত্রের খবর, ষাঁড়টিকে কাবু করতে জেলাশাসকের বিশেষ নির্দেশে জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণী বিভাগ হস্তক্ষেপ করে। রবিবার বিকেলে জেলাশাসকের নির্দেশেই ষাঁড়টিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করার প্রস্ততি শুরু হয়। বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ শাখার স্কোয়াডের কর্মীরা বাঘ ধরার মতো প্রস্তুতি নিয়ে ট্র্যাঙ্কুলাইজার টিম-সহ পৌঁছয় ধূপগুড়ি খলাইগ্রাম এলাকায়। সেখানে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ষাঁড়টিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। তা দেখতে ভিড় জমে যায় স্থানীয়দের। যদিও আতঙ্কে কেউ ষাঁড়টির কাছে যেতে পারেন না। অবশেষে হিংস্র ষাঁড়টিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে কাবু করেন বিট অফিসার রাজীবচন্দ্র দে। এর পর প্রায় ৩০ জন গ্রামবাসী মিলে ষাঁড়টিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে উদ্ধার করেন। আতঙ্কমুক্ত হন গ্রামবাসীরা। বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ শাখার স্কোয়াডের রেঞ্জার শুভাশিস রায়ের দাবি, ‘‘এই প্রথম কোনও গৃহপালিত প্রাণীকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ল বন দফতর। জেলাশাসকের নির্দেশে জেলা বন আধিকারিক আমাদের নির্দেশ দেওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। দু’ঘণ্টার প্রচেষ্টায় ঘুমপাড়ানি গুলি করে ষাঁড়টিকে কাবু করা হয়।’’