রাজ্য অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে চাপে ফেলতে পেট্রল ও ডিজেলের উপর থেকে রাজ্যের প্রাপ্য কর থেকে এক টাকা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রবিবার এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
দেশে বেড়ে চলা পেট্রোপণ্যের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে অমিত বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও সিদ্ধান্তের সঙ্গে মানবিকতার কোনও যোগাযোগ নেই। কিন্তু আমাদের হাতে সে ভাবে টাকা নেই, তা সত্ত্বেও আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে পেট্রল ও ডিজেলের প্রতি লিটারে এক টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।’’ বিজেপির তরফে এই পদক্ষেপকে ভোটের আগে চমক বলে কটাক্ষ করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা থেকে রাজ্যে এই নতুন দাম কার্যকর হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি এক টাকা খুবই কম। কিন্তু তাও আমরা সাধারণ মানুষকে সুরাহা দিতে চাই। কৃষকরা চাষের জন্য ডিজেল ব্যবহার করেন। এই এক টাকা কমানোর ফলে চাষের ক্ষেত্রে যদি একটু লাভ হয় তাহলেই আমরা খুশি।’’ মমতার সরকারের অর্থমন্ত্রী দাবি করেছেন, বর্তমানের পেট্রোপণ্যের মূল্য অনুযায়ী, কেন্দ্র প্রতি লিটার পেট্রলে ৩২.৯০ টাকা ও ডিজেল পিছু ৩১.৮০ টাকা কর এবং সেস নিচ্ছে। কিন্তু রাজ্য সরকার প্রতি লিটার পেট্রলে ১৮.৪৬ টাকা ও ডিজেলে লিটার পিছু ১২.৫৭ টাকা কর বাবদ পাচ্ছে। তাঁর কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রল ডিজেল থেকে বিপুল পরিমাণ কর বাবদ আয় করলেও, দেশের মানুষের জন্য কোনও ছাড় দিচ্ছে না। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আয়ের অল্প পরিমাণ থেকেও রাজ্যের মানুষকে সুরাহা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে অর্থমন্ত্রী আক্রমণ করেন দেশের অমিত শাহকে। তিনি বলেন, ‘‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় এসে রাশি রাশি মিথ্যে বলে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, মোদী সরকার নাকি বাংলাকে গত ছয় বছরে ৩.৫৯ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছে। এমন দাবি শুধু মিথ্যাই নয়, রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’ তাঁর দাবি, ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত এক লক্ষ ১৩ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। ডাহা মিথ্যে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’’ রাজ্যের থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর তুলে নিয়ে গিয়েই সেই অর্থ রাজ্যকে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উন্মুক্ত মঞ্চে মুখোমুখি বিতর্কসভায় বসার চ্যালেঞ্জও জানিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। সঙ্গে অমিত দাবি করেন, রাজ্যের মানুষের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ৩ লক্ষ ২ হাজার ৫১ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। যা কেন্দ্রের দেওয়া অর্থের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি।