ব্রিগেডের মিটিংয়ে তৃষ্ণার্ত বাম নেতা ডি রাজা। নিজস্ব চিত্র।
শুরু রেকর্ড দিয়ে, শেষ অন্য রেকর্ডে!
ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিল রেকর্ড ঠান্ডা দিয়ে। ছুটির দিনে শেষ হল এক দশকের রেকর্ড গরমে! যা দেখে অনেকেই বলছেন, ফেব্রুয়ারিতেই যদি এই দশা হয়, মার্চ-এপ্রিলে কী হবে?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী গত এক দশকে উষ্ণতম ফেব্রুয়ারি ছিল ২০১৬ সালে। সে-বার ২১ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবারের মহানগর সেই তাপমাত্রাকে কার্যত ছুঁয়ে ফেলেছে। আলিপুরে এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৬ ডিগ্রি। আর কলকাতার উপকণ্ঠে দমদমে এ দিন তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৩৬.৯ ডিগ্রিতে!
তাপমাত্রা মাথাচাড়া দিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও। এ দিন বাঁকুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৮ ডিগ্রি। বর্ধমানেও পারদ ৩৭ ডিগ্রির উপরে। মোটামুটি সব জেলাতেই দিনের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
এ বার ফেব্রুয়ারির শুরু এবং শেষ এমন রেকর্ড দিয়ে হল কেন?
এর জন্য প্রকৃতির খেয়ালিপনাকে দায়ী করছেন অনেক আবহবিজ্ঞানী। তাঁরা জানাচ্ছেন, আচমকা উত্তুরে বাতাসের জেরে ফেব্রুয়ারির গোড়ায় কাঁপুনি ধরছিল। তেমনই এখন পশ্চিম থেকে বয়ে আসা বাতাসে এমন শুকনো গরম। তার উপরে আকাশ পরিষ্কার। ফলে কোনও বাধা ছাড়াই রোদ এসে মাটি গরম করে তুলছে।
বসন্তের ‘হারিয়ে যাওয়ার’ মধ্যেও প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। আবহবিদদের একাংশ বলছেন, যে-ভাবে প্রতি বছর বসন্ত একটু একটু করে অন্তর্হিত হয়ে যাচ্ছে, তাতে জলবায়ু বদলের পাকাপাকি ছবিটাই স্পষ্ট হচ্ছে। এ বছরেও সেই অর্থে বসন্তের দেখা মেলেনি। শীত বিদায় নিতে না-নিতেই পারদ চড়তে শুরু করেছে তরতরিয়ে। এই ধরনের ‘পরিবর্তন’ বিভিন্ন ধরনের অসুখের প্রকোপও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
তবে হাওয়া অফিসের খবর, শুকনো গরমের এই চরিত্র মার্চের প্রথম সপ্তাহেই বদলে যেতে পারে। বঙ্গোপসাগরে একটি উচ্চচাপ বলয় তৈরি হতে চলেছে। সেখান থেকে জোলো হাওয়া ঢুকবে গাঙ্গেয় বঙ্গের পরিমণ্ডলে। তাতে আকাশ মাঝেমধ্যে অংশত মেঘলাও থাকতে পারে।
ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কি?
আবহবিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, বাতাসে যে-শুষ্ক ভাব রয়েছে, তাতে জোলো হাওয়া আপাতত ঝড়বৃষ্টির মেঘ তৈরি করতে পারবে না। তাই এখনই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।