—নিজস্ব চিত্র।
ডুয়ার্সের হাতির হামলা রুখতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন স্থানীয় চাষিরা। বুনো হাতিকে বিভ্রান্ত করতে বিদ্যুতের ভুয়ো তারে নিজেদের আলু ক্ষেত ঘিরতে শুরু করেছেন ডুয়ার্সের তোতাপাড়া, গোসারহাট বা মরাঘাট জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, আলুর লোভে প্রতি রাতেই হাতির পাল ঢুকে পড়ছে তাঁদের গ্রামে। ফলে হাতির হানায় ঘুম উড়েছে স্থানীয়দের।
বানারহাট ব্লকের উত্তর ও মধ্য শালবাড়ি এলাকায় হাতির উপদ্রবের ঘটনা সবথেকে বেশি বলে দাবি গ্রামবাসীদের। হাতির হানা রুখতে চাষের জমিতেই রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন বহু চাষি। তবে এ বার তাঁরা একটি উপায় বার করেছেন। হাতিকে বিভ্রান্ত করতে তারের মধ্যে সাদা প্লাস্টিক লাগিয়ে রাখছেন তাঁরা। যাতে ওগুলিকে বিদ্যুতের তার মনে করে হাতিরা দূরে থাকে। চাষিদের দাবি, এতে সুফলও মিলেছে। এলাকার চাষি রবিকান্ত রায় বলেন, ‘‘আলুক্ষেতের চারপাশ সুতো দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সুতোর মধ্যে টুকরো করে প্লাস্টিক বেঁধে দিয়েছি। আলুর লোভে প্রায়শই রাতে গ্রামে ঢুকছে হাতি। প্লাস্টিকগুলিতে বিদ্যুতের তার ভেবে হাতিরা ফিরে যাচ্ছে। ফলে এখনও পর্যন্ত আলুক্ষেতে তেমন ক্ষতি হয়নি।’’
বন দফতরের কর্তাদের পাশাপাশি চাষিদের এই অভিনব উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন পরিবেশপ্রেমীরাও। ওদলাবাড়ি নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটি-এর কর্মকর্তা নফসর আলি বলেন, ‘‘ফসল বাঁচাতে চাষিরা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাকে সাধুবাদ জানাই। বন দফতরের পাশাপাশি আমরাও লাগাতার প্রচার চালিয়েছে যাতে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের রোখা যায়। কারণ নিজেদের ফসল বাঁচাতে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ করেন বহু চাষি। তার জেরে বহু হাতির মৃত্যু হয়েছে। এ বার হাতির হানার পাশাপাশি তাদের মৃত্যুও আটকানো যাবে বলে মনে হয়।’’ অন্য দিকে, মরাঘাট রেঞ্জের রেঞ্জার রাজকুমার পাল বলেন, ‘‘এটি খুবই অভিনব উদ্যোগ। এই পদ্ধতিতে অনেকেই হাতির হামলা রুখতে সফল হয়েছেন।’’