—নিজস্ব চিত্র।
খড়্গপুরে রাজনৈতিক সৌজন্য তৃণমূলের! বাম শ্রমিক সংগঠনের পতাকা খুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। এমনকি, সেখানে নিজেদের পতাকাও উত্তোলন করা হয়েছিল।সেই অভিযোগ ওঠার পরই দলীয় পতাকা খুলে ফেলল তৃণমূল। এর পর বাম শ্রমিক সংগঠনের নেতারা সেখানে নিজেদের পতাকা উত্তোলন করলেন। এই পদক্ষেপে তৃণমূল রাজনৈতিক সৌজন্যের নজির গড়েছে বলে মত বাম শ্রমিক সংগঠনের।
সোমবার খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ এলাকায় একটি কারখানার বাইরে থেকে সিপিএম এবং সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠনের দু’টি পতাকা নামিয়ে দিয়েছিল বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে খড়্গপুর টাউন থানার পাশাপাশি তৃণমূল এবং খড়্গপুর পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই সংগঠনের নেতারা। তবে সে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই শহরে নিজেদের পতাকা নামিয়ে নেয় তৃণমূল। এর পর সেখানে নিজেদের শ্রমিক সংগঠন দু’টির পতাকা উত্তোলন করেন বামেরা।
যা দেখে অভিভূত সিপিআই শ্রমিক সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক বিপ্লব ভট্ট। তিনি বলেন, ‘‘১৯৫১ সাল থেকে মালঞ্চ এলাকায় ওই কারখানায় আমাদের সংগঠনের শ্রমিকেরা বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন। সে সময় কারখানার বাইরে আমাদের পতাকা লাগানো হয়েছিল।’’ বুধবার শাসকদলের নেতারা দলীয় পতাকা খুলে ফেলেন। এর পর বাম সংগঠনের পতাকা তোলেন তাদের নেতারা। এর পর বিপ্লব বলেন, ‘‘সৌজন্যের নজির গড়েছে তৃণমূল। রাজনৈতিক সৌজন্য দেখানোয় তৃণমূলের নেতাদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।’’
স্থানীয়দের দাবি, ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকারে আসার পর খড়্গপুর শহরে এ ধরনের কথা শোনা যায়নি। তাঁদের মতে, খড়্গপুর যে ‘মিনি ইন্ডিয়া’, তা ফের প্রমাণিত হল। শ্রমিক আন্দোলনে রাজনৈতিক রং না দেখেই সকলে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা খড়্গপুর পুরসভার প্রশাসক প্রদীপ সরকারের মন্তব্য, ‘‘এটা ত্রিপুরা নয়, বাংলা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূলের বদনাম করতেই কে বা কারা বামফ্রন্টের দুই শ্রমিক সংগঠনের পতাকা নামিয়ে দিয়েছিল। তবে খড়্গপুর শহর সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। তা অক্ষুণ্ণ রাখতেই আমরা আজ ওদের পতাকা তোলার ব্যবস্থা করেছিলাম।’’ পতাকা-কাণ্ডে দোষীদের বিরুদ্ধে তৃণমূল পদক্ষেপের সুপারিশ করবে বলেও জানিয়েছেন প্রদীপ।
প্রসঙ্গত, খড়্গপুরে সৌজন্য দেখালেও মঙ্গলবার খাস কলকাতা শহরে শাসকদলের অন্য রূপ দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। বামেদের অভিযোগ ছিল, কলকাতা পুরভোটের ফলাফল ঘোষণার দিনে নেতাজি নগর এলাকায় ৯৮ নম্বর ওয়ার্ড জয়ের পর তাঁদের একাধিক কার্যালয়ে হানাদারি শুরু করেন তৃণমূলকর্মীরা। ওই এলাকায় বাস্তুহারা সমিতি, এসএফআই এবং ডিওয়াইএফ-সহ বাম শিবিরের বিভিন্ন অফিসের দখল নিতে সেখানে জোড়াফুল শিবিরের পতাকা তোলারও অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।