সুপ্রিম কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
কামদুনি মামলায় হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করতে চলেছে নির্যাতিতার পরিবার। ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি, মঙ্গলবার মামলার প্রথম শুনানি। সেখানে উপস্থিত থাকার জন্য নির্যাতিতার পরিবার, শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায় এবং মৌসুমী কয়াল দিল্লি যাচ্ছেন। রবিবার রাতে হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে দিল্লি রওনা দিচ্ছেন। শুনানির পর প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্যও আবেদন জানিয়ে চিঠি দেবেন তাঁরা।
কামদুনির নির্যাতিতার জন্য সুবিচার চেয়ে যাঁরা লড়াই করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন প্রদীপ। তিনি জানান, নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছে, তা যাতে বহাল থাকে, সে কারণে সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ তাঁরা। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা হাই কোর্টের রায়ে সন্তুষ্ট নই। পশ্চিমবঙ্গবাসীও তা-ই বলছেন। বিচারব্যবস্থাকে সম্মান জানিয়ে বলছি, রাজ্য প্রশাসন বা পুলিশি ব্যবস্থা এবং সিআইডির যে তদন্ত হয়েছে, আমাদের মনে হচ্ছে তার মধ্যে বিস্তর ভুলভ্রান্তি রয়েছে।’’
এর পরেই প্রদীপ প্রশ্ন করে বলেন, ‘‘ফাঁসির আসামি কী করে বেকসুর খালাস হতে পারে? অনেক প্রমাণ না দেখে বেরিয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে বিচারের আশা করতে পারি। রাজ্য প্রশাসনের মুখ্য যাঁরা, তাঁরাই বলছেন রায় নিয়ে সন্তুষ্ট নন।’’ তিনি আরও জানান, ৪ ডিসেম্বর রাজ্য সরকার যে এসএলপি করে, তাতে দুষ্কৃতীদের আইনজীবী আবেদন করেন, যে দু’জন জেলবন্দি রয়েছেন, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হোক। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে বিশেষ অবকাশকালীন পিটিশনে (এসএলপি) প্রশ্ন তোলা হবে, কী করে দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। শিক্ষক চান, ভারতবাসী, পশ্চিমবঙ্গবাসীরও এই মামলার প্রতি যেন নজর থাকে।
২০১৩ সালে ঘটেছিল কামদুনির ঘটনা। নৃশংস ওই ঘটনার বিচারে তিন দোষী সাব্যস্ত সইফুল আলি, আনসার আলি, আমিন আলিকে ফাঁসির সাজা দেয় নিম্ন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ইমানুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম এবং ভোলানাথ নস্করকে। সাইফুল এবং আনসারকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে বাকিদের সাজা মকুব করে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এই রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। সুপ্রিম কোর্ট সেই ‘মুক্তি’র নির্দেশে শর্ত আরোপ করে। জানায়, কামদুনি ধর্ষণ মামলা থেকে মুক্তি পাওয়া চার জনকে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।