West Bengal SSC Scam

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরব মমতার প্রথম স্কুলশিক্ষামন্ত্রী, তিনিও দিয়েছিলেন তালিকা

প্রথম মমতা মন্ত্রিসভায় তিনিই ছিলেন স্কুলশিক্ষামন্ত্রী। পরে পান কৃষি দফতর। তবে তিনি থাকলে স্বজনপোষণের অনুরোধ প্রতিরোধের চেষ্টা করতে চাইতেন বলেই জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। বললেন তালিকা দেওয়ার কথাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবদাদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:৪৪
Share:

মমতার প্রথম মন্ত্রিসভায় ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। — ফাইল চিত্র।

এসএসসি, টেট, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, আদালতের নির্দেশ এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার নিয়ে যখন উত্তাল রাজ্য রাজনীতি, তখন প্রথম মুখ খুললেন ‘সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই’ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনিই ছিলেন স্কুলশিক্ষামন্ত্রী। তবে তাঁর আমলের কোনও দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি।

Advertisement

‘শিক্ষকদিবস’-এর দিনই মাস্টারমশাই বললেন যে, অধুনা গ্রেফতার এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ তাঁকে ‘মাস্টারমশাই’ বলে ডাকতেন, তাঁর এমন রূপ তিনি কল্পনা করতে পারেননি। পাশাপাশিই জানালেন, তৃণমূলের অন্য অনেক বিধায়কের মতো দলের নির্দেশে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা জমা দিয়েছিলেন তিনিও।

সদ্য ৯১ বছরে পা রেখেছেন রবীন্দ্রনাথ। এমনিতে সুস্থ থাকলেও মন ভাল নেই। তৃণমূল ছেড়ে এখন তিনি বিজেপিতে। গত বিধানসভা ভোটে লড়েওছিলেন। কিন্তু হেরে গিয়েছেন। ‘শিক্ষকদিবস’-এ প্রত্যাশিত ভাবেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁর ছেড়ে-আসা দলের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসায়।

Advertisement

২০০১ থেকে ২০১৬— টানা চার বার তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ২০১১ সালে ‘পরিবর্তন’-এর পর প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি ২০ মে থেকে ২১ নভেম্বর রাজ্যের স্কুলশিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। পরে কৃষি দফতরের মন্ত্রী হন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার চেনা তৃণমূল আর নেই। এখনকার দল আমার কাছে অবাঞ্ছিত।’’

সক্রিয় রাজনীতিতে আর থাকতে চান না জানিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘তৃণমূল অনেক আগেই ত্যাগ করেছি। বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলাম। ধরতে গেলে বিজেপিতেই রয়েছি। কিন্তু সক্রিয় রাজনীতি আর করতে পারছি না।’’ এই প্রসঙ্গেই আনলেন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের কথা। বললেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমায় ‘মাস্টারমশাই’ বলে ডাকতেন। কিন্তু তাঁর ভিতরে যে এমন কদর্য রূপ রয়েছে, তা কোনও দিন ভাবিনি। তবে আমার এটাও মনে হয় যে, পার্থকে এই পরিস্থিতিতে আনা হয়েছে।’’

তাঁর আমলে কি শিক্ষক নিয়োগে ‘স্বজনপোষণ’-এর অনুরোধ এসেছিল? রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমি তো খুব কম দিন ছিলাম। চলে এলাম কৃষিতে। তবে আমি থাকলে প্রতিরোধ করতাম। পারতাম কি না জানি না কিন্তু আমি এ সবের সঙ্গে কখনওই থাকতাম না বা সমর্থন করতাম না।’’ বিজেপি-সহ বিরোধীরা অভিযোগ করে যে, শিক্ষক নিয়োগের জন্য সব তৃণমূল বিধায়কের থেকেই পছন্দের প্রার্থীদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। সেই দাবি সঠিক জানিয়ে রবীন্দ্রনাথের আরও দাবি, ‘‘আমার কাছেও তালিকা চাওয়া হয়েছিল। আমি দিয়েওছিলাম। ভেবেছিলাম স্বচ্ছ পদ্ধতিতে চুক্তিভিত্তিক কিছু একটা হবে। কিন্তু সেই তালিকার কারও চাকরি হয়নি। এখন মনে হচ্ছে, টাকা দিতে পারিনি বলেই হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement