পরিবেশমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।—ফাইল চিত্র।
শব্দবাজি ফাটা কিংবা মাইক বা ডিজে বাজার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্মীরা। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কোথায় কী? সবই তো চুপচাপ! যতটুকু হচ্ছে, সবটাই নিয়ম মেনে। বারবার এমন ‘বোকা বনে যাওয়ার’ কারণ নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছিল প্রশাসনের অন্দরে। কালীপুজো এবং দীপাবলির পর, সোমবার খোদ পরিবেশমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র দাবি করলেন, ‘‘যারা নিয়ম ভাঙছে, তারা কারও মাধ্যমে খবরটা পেয়ে যাচ্ছে যে, কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, ‘অ্যাকশন’ শুরু হবে। কারা এই খবর ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত, তা নিয়ে দিন কয়েকের মধ্যেই অনুসন্ধান শুরু হবে। এদের চিহ্নিত করা না গেলে কখনওই বিষয়টা ঠেকানো যাবে না।’’
প্রচার সত্ত্বেও শব্দের দাপট যে কলকাতা এবং বৃহত্তর কলকাতায় পুরোপুরি ঠেকানো যায়নি, তা মেনে নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এ বার আমরা অনেক চেষ্টা করেছিলাম। জেলা বা গ্রামে সফল হলেও কলকাতায় পারলাম না। আমাদের চেষ্টায় ত্রুটি ছিল না। কোথায়, কাদের জন্য ব্যর্থ হলাম, সেই পর্যালোচনা এখন জরুরি।’’
পরিবেশকর্মীদের একাংশ আগেই অভিযোগ করেছিলেন যে, যাঁরা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাজি ফাটান বা মাইক বাজান, তাঁদের সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের ‘যোগসাজশ’ রয়েছে। পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘‘যারা নিয়ম ভাঙে, কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ আসার কিছু ক্ষণের মধ্যে তারা টের পেয়ে যায় যে, পুলিশ-প্রশাসনের দল আসছে। এটা কী করে প্রতি বার হয়, তা সত্যিই আশ্চর্যের! ভিতরের লোক ছাড়া এটা কখনওই সম্ভব নয়।’’ আর এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘ভিতরের যোগসাজশ যত ক্ষণ না ধরা যাবে, কিছু করা যাবে না!’’ তাঁদের এই অভিযোগে এ বার মন্ত্রীর সিলমোহর পড়ায় অস্বস্তিতে অনেকেই।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা অবশ্য এ দিন মন্ত্রীর অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। মন্তব্য করেননি পুলিশকর্তারাও। তবে পরিবেশমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে জমা পড়া সব অভিযোগের ক্ষেত্রেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সৌমেনবাবুর কথায়, ‘‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেব আমরা। কোনও দুর্বলতা দেখানো হবে না।’’