প্রতীকী ছবি।
আংশিক ভাবে নবপর্যায়ে স্কুল চালু হয়েছে পক্ষকাল আগে। এ বার স্কুলে দুপুরের খাবার-সহ কিছু বিষয়ে শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা ও তৎপরতা দেখে প্রথম থেকে অষ্টম, এই আট শ্রেণির পঠনপাঠন অচিরে শুরু করার ব্যাপারে জল্পনা পল্লবিত হয়েছে। বিভিন্ন স্কুলে মিড-ডে মিল রান্না করার পরিকাঠামোর হালহকিকত জানতে চেয়েছে শিক্ষা দফতর। স্কুলশিক্ষা দফতরের মিড-ডে মিল প্রকল্পের অধিকর্তা কিছু প্রশ্নের উত্তর চেয়েছেন ৩ ডিসেম্বর, শুক্রবারের মধ্যে।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের প্রশ্ন, তা হলে কি প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলও দ্রুত খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার? কারণ মিড-ডে মিল দেওয়া হয় শুধু ওই আট শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদেরই। শিক্ষা দফতরের এক কর্তাও জানান, মিড-ডে মিলের পরিকাঠামো নিয়ে খোঁজখবরের বিষয়টিকে জানুয়ারিতে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল খোলার ইঙ্গিত বলা যেতেই পারে। তবে পুরোটাই নির্ভর করবে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির উপরে। নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস শুরুর পরে পরেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আশ্বাস দিয়েছিলেন, অতিমারি পরিস্থিতি দেখে নিয়ে তাঁরা পুরো স্কুলই খুলে দিতে চান। তার পরে শিক্ষা দফতরের তরফে মিড-ডে মিলের সবিস্তার তথ্য তলবের ঘটনায় প্রথম থেকে অষ্টমের ক্লাস চালু করার সম্ভাবনা জেগেছে।
কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, মিড-ডে মিল সংক্রান্ত পরিকাঠামোয় কিছু ঘাটতি থাকলে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে তা পূরণ করতে বলা হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, রান্নাঘর সত্যিই রান্না করার উপযুক্ত কি না, রান্নার সব সরঞ্জাম ঠিকঠাক আছে কি না, স্টোররুম স্বাস্থ্যকর কি না। যদি তা না-হয়, সে-ক্ষেত্রে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে ঘাটতি পূরণ করতে হবে। রান্নার যাবতীয় সরঞ্জাম স্যানিটাইজ় বা জীবাণুমুক্ত করতে হবে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে।
পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল খাওয়ার জন্য যদি ডাইনিং হল থাকে, সেটি কী অবস্থায় আছে, জানতে চাওয়া হয়েছে তা-ও। দুপুরের খাবার রান্নার জন্য এলপিজি সংযোগ, রান্নার চুল্লি, খাবার আগে ও পরে পড়ুয়াদের হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ঠিকমতো আছে কি না এবং স্কুলগুলির শৌচালয়ের অবস্থা কেমন— এই সব প্রশ্নেরও উত্তর দিতে বলা হয়েছে। যাঁরা মিড-ডে মিলের রান্না করেন এবং যে-সব কর্মী রাঁধুনিদের সাহায্য করেন, তাঁরা করোনার জোড়া টিকা নিয়েছেন কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হণ্ডা বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরেই দাবি জানাচ্ছি, করোনা বিধি মেনে স্কুল খোলা হোক। প্রাথমিক স্কুল না-খুললে স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমে বাড়তে থাকবে। মিড-ডে মিলের সবিস্তার তথ্য জানতে চাওয়া স্কুল শীঘ্র খোলারই ইঙ্গিত বলে মনে হচ্ছে।” হাওড়ার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দাসের বক্তব্য, দেড় বছরেরও বেশি সময় স্কুল বন্ধ থাকায় মিড-ডে মিল রান্না ও খাওয়ার জায়গা অপরিষ্কার থাকতে পারে। এর মধ্যে দু’টি ঘূর্ণিঝড়ে অনেক স্কুলেরই রান্নাঘরের টিনের ছাউনি উড়ে গিয়েছে। মেরামতি দরকার। অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন গড়াই বলেন, “পড়ুয়ারা বহু দিন রান্না করা খাবার পায়নি। স্কুল খুললে কোভিড বিধি মেনেই যাতে মিড-ডে মিল রান্না হয়, সেটা দেখতে হবে।”