শাহজাহান শেখ। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
নাম শাহজাহান, দেখা যাচ্ছে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণও বাদশাহি! সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ দলের বড় কোনও পদে না থেকেও কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি কী ভাবে বানিয়েছিলেন, তারই তল পেতে এ বার তদন্ত নামতে চাইছে ইডি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই শাহজাহান শেখের ১২.৭৮ কোটি টাকার ফ্ল্যাট, বাড়ি, মাছের ভেড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে তারা। ইডি সূ্ত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, যে শাহজাহানের সম্পত্তির পরিমাণ শুধু এটুকুই নয়। ইডির নজরে রয়েছে শাহজাহানেরই আরও অন্তত ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি। এই সমস্ত সম্পত্তির নেপথ্যে কি শুধুই রেশন দুর্নীতি, না কি শাহজাহানের বিরুদ্ধে আরও যে সব দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে, তারও ভূমিকা রয়েছে এর নেপথ্যে? শুক্রবার এ ব্যাপারে শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে বসিরহাট আদালতে আবেদন করেছে ইডি। শনিবার আদালতে ইডি জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত শাহজাহানের ৩২ কোটি ২০ লক্ষ টাকার সম্পত্তির হদিস পেয়েছে তারা।
শাহজাহান এখন জেলে। তার আগে তাকে সিবিআই হেফাজতে নিয়েছিল। তবে সেটি ছিল ইডির উপর হামলার মামলা। কিন্তু যে তদন্ত করতে গিয়ে শাহজাহানের গ্রামে হামলার মুখে পড়েছিলেন ইডির গোয়েন্দারা, সেই তদন্তে এখনও শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা বাকি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এবং তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। সেই ঘটনার পরই সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে ইডির উপর হামলা হয়। পালিয়ে যান শাহজাহানও। এর পর তাঁকে গ্রেফতার করা হলে হেফাজতে নেয় সিবিআই। ফলে ইডি শাহজাহানকে হেফাজতে পায়নি এখনও।
তবে শাহজাহানকে হেফাজতে না পেলেও ইডির তদন্ত থেমে থাকেনি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার সন্দেশখালিতে গিয়েছে ইডির দল। শাহজাহানের বাজার থেকে শুরু করে তাঁর মাছের ভেড়ি, তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। শাহজাহানের বিরুদ্ধে আরও একটি দুর্নীতির খোঁজ পেয়েছে ইডি।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, শুধু রেশন নয়, ভেড়ির মাছের আমদানি-রফতানির ব্যবসাও করতেন শাহজাহান। আর সেই ব্যবসাতেও নানা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়াও শাহজাহান আর কী কী ব্যবসা চালাতেন, সে ব্যাপারে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতাকে প্রশ্ন করতে চায় ইডি।
এই মর্মেই শাহাজাহানকে হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে শনিবার বসিরহাট আদালতে আবেদন করেছে ইডি। আদালত সেই অনুমতি দিয়েছে।