ইডির নজরে শাহজাহান শেখ-ঘনিষ্ঠ আরও এক তৃণমূল নেতা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
সন্দেশখালির আরও এক তৃণমূল নেতাকে তলব করল ইডি। শাসকদলের ওই স্থানীয় নেতার নাম হাজি সিদ্দিক মোল্লা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তলবে সাড়া দিয়ে শনিবার সকালে ইডির কলকাতার দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছেছেন তিনি। কিন্তু কেন সন্দেশখালির এই তৃণমূল নেতাকে তলব করল ইডি? ইডির একটি সূত্র জানাচ্ছে, শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবু হাজরার মতো হাজিও শাহজাহান শেখ-ঘনিষ্ঠ। তদন্তকারী আধিকারিকেরা মনে করছেন, শিবুর মতো তাঁর নাম কাজে লাগিয়েও শাহজাহান নিজের সম্পত্তি বৃদ্ধি করেছিলেন। আর তাই সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাঁকে শনিবার সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ফের সন্দেশখালিতে হানা দিয়েছিল অন্য এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। প্রচুর অস্ত্র এবং বোমা মজুত রয়েছে, এমন খবর পাওয়া মাত্রই শাহজাহান শেখের এক ঘনিষ্ঠের আত্মীয় আবু তালেব মোল্লার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তল্লাশি অভিযানে মাটি খুঁড়ে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা মেলে। বেলা বাড়তে সেখানে পৌঁছয় এনএসজি-ও (ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড)। অস্ত্র খুঁজে বার করতে নিয়ে আসা হয় স্বয়ংক্রিয় রোবট। সন্দেশখালিতে দিনভর তল্লাশি চালিয়ে বহু অস্ত্রশস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধার করল সিবিআই। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে যেমন রয়েছে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, তেমনই রয়েছে পুলিশের ব্যবহারের রিভলভারও। এ ছাড়াও উদ্ধার হয়েছে কার্তুজ, দেশি বোমা। সিবিআইয়ের জারি করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছবি দিয়ে দাবি করা হয়েছে, অস্ত্রের পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে কিছু নথিও। যেখানে রয়েছে জেলবন্দি তৃণমূল নেতা শাহজাহানের সচিত্র পরিচয়পত্রও। দিনভর তল্লাশি চালানোর পর রাত ৯টা ৫৪ মিনিটে সন্দেশখালি থেকে বেরিয়ে যায় সিবিআই এবং এনএসজি।
অন্য দিকে, শুক্রবারের সারা দিনের হইচইয়ের পর শনিবার শুনশান সন্দেশখালির সরবেড়িয়া মল্লিকপুরের আবুর বাড়ির এলাকা। এলাকা জুড়ে আতঙ্কের আবহ তৈরি হয়েছে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপের কারণে ওই বাড়ির আশপাশে কেউ যেতে পারেননি। শনিবারও দূর থেকেই ওই বাড়ির দিকে দৃষ্টি রাখছেন এলাকাবাসীরা। স্থানীয় আনসার আলি, স্বপন সর্দারেরা জানিয়েছেন, বহু দিন ধরে তাঁরা গ্রামে বসবাস করছেন। কিন্তু এ রকম ঘটনা আগে কোনও দিন দেখেননি বা শোনেননি। ওই বাড়ি থেকে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে জানার পরেও তাঁরা হতবাক। তাঁদের অনুমান, সন্দেশখালিতে এ রকম আরও বাড়িতে অস্ত্র লুকোনো রয়েছে। তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলেও দাবি তুলেছেন এলাকাবাসীদের কেউ কেউ।