নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে অয়ন শীলকে। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এ বার অয়ন শীলের পুত্র অভিষেকের ‘পরিচিত’ ইমন গঙ্গোপাধ্যায়কে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। যদিও ইমনকে নিজের ‘বান্ধবী’ বলতে আগে অস্বীকার করেছিলেন অয়ন-পুত্র। বুধবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে (কলকাতায় যেখানে ইডির দফতর রয়েছে) ইমনকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল হুগলির প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শান্তনুর গ্রেফতারের পর পরই অয়নের ব্যাপারে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। শান্তনুর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অয়ন। এর পরই গত ১৮ মার্চ অয়নের সল্টলেকের অফিসে হানা দেয় ইডি। দীর্ঘ প্রায় ৩৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর ১৯ মার্চ গ্রেফতার করা হয় অয়নকে। এর পর থেকেই তদন্তকারীদের নজরে এসেছেন অয়নের ‘ঘনিষ্ঠ’রা।
অয়ন-পুত্র অভিষেকের ভূমিকাও তদন্তকারীদের আতশকাচের তলায় আসে। ইমন এবং অভিষেক যৌথ মালিকানায় একটি পেট্রল পাম্প কিনেছিলেন বলে হলফনামায় জানিয়েছিল ইডি। হুগলি জেলার গুড়াপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে সেই পেট্রল পাম্প কেনার যাবতীয় নথি আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে এসেছে। সরকারি সিলমোহর থাকা ওই নথি অনুযায়ী, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ১ কোটি টাকায় পেট্রল পাম্পটি কেনা হয়েছিল। গুড়াপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা জমির উপর এই পেট্রল পাম্প অভিষেক এবং ইমন কিনেছিলেন কলকাতার বিডন স্ট্রিটের বাসিন্দা নন্দগোপাল শুক্ল, অজয় শুক্ল এবং আশিস শুক্লর কাছ থেকে। স্থানীয়দের কাছে পাম্পটি ‘শুক্ল পাম্প’ নামেই পরিচিত। শুধু তাই নয়, কলকাতায় বন্ডেল রোডের উপরে অভিষেক এবং ইমন যৌথ মালিকানায় একটি ফার্ম খুলেছিলেন। তার নাম দিয়েছিলেন ‘ফসিল্স’।
ওই সব সম্পত্তি কেনার নেপথ্যে অয়নের দুর্নীতির টাকার ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। ইমনের বাবা বিভাস গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূমিকাও ইডির নজরে রয়েছে। বিভাস এক সময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নগরোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা ছিলেন। যদিও সরাসরি তাঁর দুর্নীতিতে যোগ থাকা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তদন্তকারীরা। এই আবহে এ বার ইমনকে তলব করা হল।