ফাইল চিত্র
রাত সাড়ে ১১টার সময় সিবিআইয়ের নোটিস এসেছিল ই-মেলে। তাতে বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার দুপুরেই তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহাকে হাজিরা দিতে হবে নিজাম প্যালেসে। তেহট্টের বিধায়ক সেই নোটিস পাওয়া মাত্রই শুরু করে দেন কলকাতায় আসার প্রস্তুতি। তবে সে কথা মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
রাতেই গাড়ির চালক এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীকে জানিয়ে রেখেছিলেন কলকাতায় রওনা হওয়ার কথা। ভোর চারটে নাগাদ তাঁদের সঙ্গেই বাড়ি থেকে বার হন। নিজামে যে আসছেন, তা দলের ঘনিষ্ঠ নেতাদের তাপস জানান প্রায় অর্ধেক রাস্তা পেরোনোর পর সকাল ৮টা নাগাদ। এর আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাপস বলেন, ‘‘দেখা করতে বলে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের নোটিসে দেওয়া হয়েছিল। অসুস্থ শরীর নিয়ে সময়ের মধ্যেই কলকাতায় আসছি। কারণ আমি তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে চাই।’’
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় নিজামে হাজির হতে বলা হয়েছিল তাপসকে। যথা সময়েই কলকাতায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে পৌঁছে যান তাপস। দুপুর ২টো নাগাদ প্রথম দফার জেরার পর বাইরে বেরিয়ে বলেন, ‘‘যা বলার সিবিআইকে বলেছি।’’
টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাপসের বিরুদ্ধে। রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে তাপসেরও বড় ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরই দলের বেশ কিছু নেতা। অন্য দিকে তাপসের আক্ষেপ ছিল, সিবিআই তাঁর বাড়িতে হানা দিলেও দলের কেউ খোঁজখবর নেননি। মঙ্গলবার সিবিআইয়ের নোটিস পেয়ে কলকাতায় এসে পৌঁছনোর আগে কি সেই জন্যই তৃণমূলে তাঁর ঘনিষ্ঠদেরও খবর দেননি তাপস? তা অবশ্য বিধায়ক জানাননি। শুধু বলেছেন, ‘‘আমি প্রথম থেকেই বলছি তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করব। যখন ডেকে পাঠাবে যাব। তাই ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের নোটিসে আমি হাজিরা দিতে যাচ্ছি। সিবিআই তদন্তের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে।’’
গত শুক্রবারই, ইদের আগের দিন বিকেলে তাপসের তেহট্টের বাড়িতে বিশেষ অভিযান চালায় সিবিআই। প্রায় ১৫ ঘণ্টার ওই অভিযানের পর তাপসের বাড়ি থেকে কিছু নথি পাওয়া গেলেও তাপসকে সে দিন গ্রেফতার করেনি সিবিআই। সিবিআইয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে কর্নাটক এবং রাজ্যের ছ’টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআইয়ের দল। সেখান থেকেও কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে। সে ব্যাপারেই মঙ্গলবার তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।