Shahjahan Sheikh

প্রভাবশালী এক বিধায়ককে ‘হাতে রাখতে’ গাড়ি উপহার দেন শাহজাহান! চার্জশিটে আর কী দাবি করল ইডি?

ইডি চার্জশিটে জানিয়েছে, প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং বিধায়কদের খুশি করতে মাঝেমধ্যেই দামি উপহার দিতেন শাহজাহান। এর মাধ্যমে সন্দেশখালি এলাকায় তিনি নিজের প্রতিপত্তি বজায় রাখতেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ১৩:৩৭
Share:

সন্দেশখালির শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র।

প্রভাবশালী এক বিধায়ককে দামি গাড়ি উপহার দিয়েছিলেন সন্দেশখালির শাহজাহান শেখ। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটে এমনটাই দাবি করল ইডি। ওই বিধায়ককে ‘হাতে রাখতে’ই এই উপহার দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তবে বিধায়ক বলতে কার কথা বলা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেনি ইডি। উপহারের গাড়িটি শাহজাহান বা ওই বিধায়কের নামেও কেনা হয়নি।

Advertisement

ইডি চার্জশিটে জানিয়েছে, প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং বিধায়কদের খুশি করতে মাঝেমধ্যেই এই ধরনের দামি উপহার দিতেন শাহজাহান। এর মাধ্যমে সন্দেশখালি এলাকায় তিনি তাঁর প্রতিপত্তি বজায় রাখতেন। তেমনই এক বিধায়ককে দামি গাড়ি উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন তিনি। ইডি তদন্ত করে জানতে পেরেছে, উপহারের এই গাড়িটি কেনা হয়েছিল অন্য এক ব্যক্তির নামে। গাড়ির নথিতে নাম রয়েছে বিএন ঘোষের। গাড়ি কেনার টাকাও তাঁর কাছ থেকেই শাহজাহান নিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।

শাহজাহানের মামলায় ইডি আগেও একাধিক বার দাবি করেছে, সন্দেশখালিতে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে ফেলেছিলেন শাহজাহান। এলাকায় তিনিই ছিলেন শেষ কথা। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার, জোর করে জমি দখল করে নেওয়া, বিঘার পর বিঘা চাষের জমিতে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকিয়ে মাছের ভেড়ি তৈরি করা, টাকা তোলার মতো অভিযোগ রয়েছে। ইডির দাবি, সন্দেশখালিতে একাই ‘রাজত্ব’ করতেন শাহজাহান। কোনও মন্ত্রী, বিধায়ক বা সাংসদের প্রভাব সেখানে খাটত না। সেখানেই নিজের ‘দুর্নীতি’র জাল বিছিয়ে রেখেছিলেন শাহজাহান। কালো টাকা সাদা করতে নানা রকম পন্থা অবলম্বন করতেন তিনি।

Advertisement

চার্জশিটে ইডি দাবি করেছে, সন্দেশখালিতে মাছের ব্যবসা, ইটভাঁটার ব্যবসা চালাতেন শাহজাহান। এই ব্যবসার মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা করার কাজ চলত। এই কাজে তাঁর সঙ্গী হতেন ভাই আলমগির শেখ এবং ঘনিষ্ঠ শিবপ্রসাদ হাজরা, দিদার বক্স মোল্লারা। এমনকি, ভুয়ো ব্যবসায়ী বানিয়ে মাছ বিক্রি করতেন শাহজাহান। তাঁর মাছের টাকা এ ভাবে বিক্রি হয়ে ফিরে আসত তাঁর কাছেই।

শাহজাহানের মামলায় এখনও পর্যন্ত ২৬১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এ ছাড়া শাহজাহানের তিনটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শাহজাহানের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেখানে কয়েক কোটি টাকা গচ্ছিত রয়েছে। ইডির দাবি, এই দুর্নীতির কালো টাকা একটি ট্রাস্টে বিনিয়োগ করতেন শাহজাহান। ট্রাস্টের নামে জমিও কিনতেন। তাতে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেত।

রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলার তদন্তে গ্রেফতার হওয়া জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সূত্রে প্রথম প্রকাশ্যে আসে শাহজাহানের নাম। ইডি তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল। কিন্তু তাঁর ঘনিষ্ঠেরা কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। আক্রান্তও হন ইডি আধিকারিকেরা। এর পর থেকে দীর্ঘ দিন শাহজাহান নিখোঁজ ছিলেন। পরে রাজ্য পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে তুলে দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে। বর্তমানে শাহজাহান রয়েছেন জেল হেফাজতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement