—ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের অভিনেতা-বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে রেস্তরাঁর মালিককে মারধরের অভিযোগের তদন্ত ঘটনায় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগকেই চালিয়ে নিয়ে যেতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশ, ওই ঘটনায় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ (এসিপি)-এর নেতৃত্বে গোয়েন্দা বিভাগ (ডিডি) তদন্ত করবে। তদন্তের অগ্রগতি আদালতকে জানাতে হবে। এই মামলার সঙ্গে যুক্ত তথ্যপ্রমাণও সংরক্ষণ করে রাখতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি মামলাকারী রেস্তরাঁ-মালিকের নিরাপত্তার বিষয়টিও পুলিশকে নিশ্চিত করতে বলেছেন বিচারপতি। আগামী ৪ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সম্প্রতি নিউ টাউনের একটি রেস্তরাঁর মালিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল সোহমের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পরে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং লাগাতার হুমকি পাওয়ার অভিযোগ তুলে কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আনিসুল আলম নামে ওই রেস্তরাঁ-মালিক। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী শামিম আহমেদ সওয়াল করেন, পুরো ঘটনাটি সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে। অভিযোগ জানানোর পরেও পুলিশ সঠিক ভাবে এই মামলার তদন্ত করছে না। সিআইডির কোনও উচ্চ পদমর্যাদার অফিসারকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিক আদালত।
এর প্রেক্ষিতে রাজ্য জানায়, এই মামলাটি থানা থেকে সরিয়ে তদন্তের দায়িত্ব বিধাননগরের গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। নেতৃত্ব দেবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ (এসিপি) পদমর্যাদার অফিসার। রাজ্যের বক্তব্য, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল পুলিশ। দু’পক্ষকে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছিল। সেই সময় সোহমের শুটিং চলছিল। আনিসুল প্রথমে অভিযোগ দায়ের না করে মীমাংসা করতে চেয়েছিলেন। সেই মতো সমঝোতা হয়। কিন্তু পরের দিন ওই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার পরেই রেস্তরাঁর মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়। ওই একই দিন সন্ধ্যায় অভিনেতাও থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন। ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৭ জুন। আর তার দু’দিন পর অর্থাৎ ৯ তারিখ মেডিক্যাল করানো হয় আক্রান্ত ব্যক্তির। আঘাত গুরুতর হলে এত দেরিতে মেডিক্যাল করানো হল কেন? সেই প্রশ্নও তোলা হয় আদালতে। এমতাবস্থায় আদালত আপাতত গোয়েন্দা বিভাগের উপরই তদন্তে আস্থা রাখল।
গত সপ্তাহে শুক্রবার নিউ টাউনের একটি রেস্তরাঁর ছাদে শুটিং করছিলেন সোহম। সেই রেস্তরাঁর গেটের সামনে গাড়ি রাখা নিয়ে বচসা হয়। অভিযোগ, সোহম এবং তাঁর দেহরক্ষীরা আনিসুলের উপরে চড়াও হন। আনিসুলকে সোহম মারধর করেন। সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়া মারধরের ছবি (আনন্দবাজার অনলাইন সেই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি) প্রকাশ্যে আনেন রেস্তরাঁ-মালিক। ঘটনার পরে সোহম প্রথমে দাবি করেন, আনিসুল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুকথা বলেছিলেন। তাই তিনি মারধর করেছেন। যদিও পরে কার্যত একই কথায় অনড় থেকে ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং ক্ষমা চান সোহম। রেস্তরাঁ-মালিককে মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বারাসত আদালত সোহমকে দু’হাজার টাকার সাধারণ বন্ডে জামিন দিয়েছে।