Sandeshkhali Incident

‘দরজা খুলুন’, সন্দেশখালি পৌঁছে শাহজাহানের সঙ্গে মোবাইলে কথা ইডির, ফোন কেটে নাড়েন কলকাঠি?

ইডির সূত্রে খবর, শাহজাহানের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে, তাঁকে ফোন করেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। তৃণমূল নেতা সেই ফোন তোলেনও। কিন্তু শাহজাহানকে দরজা খুলতে বলার পরেই তিনি ফোন কেটে দেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:০১
Share:

তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র ।

রেশন দুর্নীতির তদন্ত করতে সন্দেশখালি পৌঁছনোর পর শাহজাহান শেখের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল ইডির! কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা একেবারে বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে শুনে নাকি ফোন কেটে দেন তৃণমূল নেতা। আর ফোন ধরেননি। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে তেমনটাই। ইডির একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত শুক্রবার সকালে শাহজাহানের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে, তাঁকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকারিকেরা। তৃণমূল নেতা সেই ফোন তোলেনও। কিন্তু ইডি আধিকারিকেরা তাঁকে বাড়ির দরজা খুলতে বলার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ফোন কেটে দেন।

Advertisement

ইডি সূত্রে খবর, এর পর বার বার ফোন করা সত্ত্বেও শাহজাহান আর ফোন ধরেননি। তৃণমূল নেতার অন্য একটি নম্বরে ফোন করলেও, সেটি ব্যস্ত ছিল। অথচ দু’টি ফোনের লোকেশনই তখন বাড়ির ভিতরে দেখাচ্ছিল বলে ইডি দাবি করেছে। ইডি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে, তল্লাশি অভিযান ঠেকাতে, তদন্তকারী আধিকারিকদের ফোন কেটে নিজের অনুগামীদের ফোন করেন শাহজাহান। ফোনে ইডি আধিকারিকদের এলাকাছাড়া করার জন্য অনুগামীদের উস্কানি দেন। কলকাঠিও নাড়েন। আর তার পরেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং শাহজাহান-অনুগামীরা এসে ইডি আধিকারিকদের মারধর করেন বলে অভিযোগ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।

যদিও এই প্রসঙ্গে শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগীর আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, শাহজাহান রোজ ভোরে হাঁটতে বেরোন। ফোন রেখে যান বাড়িতে। সেই কারণেই হয়তো ইডি তাঁর দাদার ফোনের লোকেশন বাড়ির ভিতরে দেখেছে। আলমগীর বলেন, ‘‘অনুমান, ইডি, সিবিআইও বলছে, ফোনের লোকেশন দেখাচ্ছে, ওই বাড়িতেই হয়তো ছিলেন দাদা। উনি ভোরে হাঁটতে যান। সে সময় বাড়িতে ফোন রেখে বার হন। তখনও হয়তো তা-ই করেছিলেন।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে ইডি। অভিযোগ উঠেছে ইডির বিরুদ্ধেও। আর তা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, রেশন দুর্নীতি মামলায় তল্লাশি করতে গিয়ে তাদের আধিকারিকদের উপর হামলা করা হয়েছে। কিন্তু সংবাদমাধ্যম মারফত তারা জানতে পেরেছে, ওই ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধেই পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে। শুধু তাই নয়, আদালতে ইডি জানিয়েছে, তাদের হেনস্থা করতে নতুন নতুন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাই এই বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করুক। বুধবার এই আবেদন শোনার পর মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।

গত শুক্রবার রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি যায় ইডির পাঁচ সদস্যের একটি দল। তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীও। কিন্তু সেখানে কার্যত নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে। তাঁদের ঘিরে ধরেন স্থানীয় মানুষজন। তৃণমূল নেতার বন্ধ বাড়ির দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করতেই ইডি আধিকারিকদের ঘিরে ধরেন গ্রামবাসীদের একাংশ। নিজেদের শাহজাহানের অনুগামী বলে দাবি করা ওই গ্রামবাসীদের মারধরে আক্রান্ত হন ইডির তিন অফিসার। তাঁদের মধ্যে এক জনের আঘাত ছিল গুরুতর। সেই সময় ইডির অফিসারদের ল্যাপটপ, মোবাইল, ব্যাগ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ঝামেলার সময় ওই দলের মধ্যে থাকা কেউ ইডির ল্যাপটপ, মোবাইল এবং ব্যাগ সরিয়ে নিয়েছেন। কারণ, সন্দেশখালি থেকে ফেরার সময় আর এই সমস্ত জিনিস খুঁজে পাননি ইডির কর্তারা। এর পর মারমুখী জনতার হাত থেকে কোনও মতে ‘বেঁচে ফেরেন’ ইডি আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যেরা। কয়েক জনকে অটো ধরে পালাতে দেখা যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় ইডির তিন আধিকারিককে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement