Enforcement Directorate

‘সরকারি আধিকারিককে কি জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন?’ রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে আদালতে প্রশ্নের মুখে ইডি

মঙ্গলবার রেশন দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত সল্টলেকের ব্যবসায়ী বিশ্বজিত দাস, বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকে নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:১৪
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

এ বার রেশন দুর্নীতি মামলায় আদালতে প্রশ্নের মুখে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। রেশন দুর্নীতির তদন্তে কোনও সরকারি আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কি না, তদন্তকারীদের সেই প্রশ্নই করেছেন বিচারক। খাদ্য দফতরের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার রেশন দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত সল্টলেকের ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকে নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। আদালতে ভার্চুয়ালি হাজির করানো হয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ‘ঘনিষ্ঠ’ বাকিবুর রহমানকে। আদালতে বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। বিচারক বলেন, ‘‘রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন? খাদ্য দফতরের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কি?’’

আদালতে ইডির তদন্তকারী অফিসার জানান, ডিস্ট্রিবিউটারদের সঙ্গে কথা বলে খাদ্যপণ্য কম সরবরাহ করার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ ছিল, রেশন দোকানে খাদ্যপণ্যের জোগান কম দেওয়া হয়েছিল। বাকি খাদ্যপণ্য অভিযুক্তেরা আত্মসাৎ করেছিলেন। সেই অভিযোগ যে সত্যিই, তা আদালতে মেনে নিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। ইডি দাবি করেছিল, বাকিবুরের মিল থেকে সরকারি আধিকারিকদের সিল মিলেছিল। সেই সিল ব্যবহার করে দুর্নীতি চলেছিল। বিচারক সেই প্রসঙ্গে ইডির উদ্দেশে বলেন, ‘‘বাকিবুরের মিল থেকে সরকারি আধিকারিকের সিল পেয়েছেন বলে আপনারা দাবি করেছেন। কোন কোন অফিসারের নামে সিল পেয়েছেন? সেই অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছেন?’’ জবাবে তদন্তকারী বলেন, ওই সরকারি আধিকারিকদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখনও হয়নি।

Advertisement

ইডির দাবি, গ্রাহকদের কম আটা দেওয়া হত রেশনে। সেই নিয়েও প্রশ্নের মুখে ইডি। বিচারক বলেন, ‘‘গ্রাহকদের পরিমাণে কম আটা দেওয়ার অভিযোগ করছেন, সেটা যাচাই করতে কোনও ডিলারের সঙ্গে কথা বলেছেন?’’ ইডির বক্তব্য, উদ্ধার হওয়া তথ্যপ্রমাণ এবং সাক্ষীদের বয়ানের উপর ভিত্তি করেই তদন্ত এগিয়েছে। যদিও বিচারকের প্রশ্ন, ‘‘পিএমএল (টাকা নয়ছয়) আইনের ৫০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, শুধু বয়ান নিলেই হবে না। সেই বয়ান যাচাই করেও দেখতে হবে। আপনারা কী ভাবে বলছেন কম শস্য সরবরাহ হয়েছে?’’

এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে আদালতে ধমক খেয়েছিল সিবিআই। রেশনকাণ্ডে এ বার প্রশ্নের মুখে ইডি।

ইডির দাবি, রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু)-এর টাকা শঙ্করকে পৌঁছে দিতেন বিশ্বজিৎ। শঙ্করের কাছে বালুর যে টাকা পৌঁছত, তা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় বদলে ফেলা হত। পাচার করে দেওয়া হত দুবাইয়ে। সেই কাজেও প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা করতেন বিশ্বজিৎ। ইডি দাবি করেছে, বালুর যে ২০০০ কোটি টাকা শঙ্করের মাধ্যমে দুবাই পাঠানো হয়েছে, সেই টাকার একটা অংশ দুবাইয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। শঙ্কর এবং বিশ্বজিৎকে আদালতে হাজির করানো হয়েছে মঙ্গলবার।

অন্য দিকে, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গত বছর অক্টোবরে গ্রেফতার হন বাকিবুর। তার আগে কলকাতার কৈখালির ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। ইডি সূত্রে দাবি, অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বাকিবুরের। বাকিবুরের বাড়ি থেকে পাওয়া নথির সূত্র ধরেই গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। ইডির দাবি, দু’জনের মধ্যে একটি যোগসূত্রও ছিল। তাঁকে মঙ্গলবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করানো হয়েছে আদালতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement