বাকিবুর রহমান। —ফাইল চিত্র ।
বাকিবুর রহমানকে চেক এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নথিতে স্বাক্ষরের অনুমতি দিলে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে ফেলা হতে পারে। হাতবদল হয়ে যেতে পারে টাকার। আদালতে এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করল ইডি। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলে রয়েছেন বাকিবুর রহমান। গত ২ ফেব্রুয়ারি ধৃত বাকিবুর সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে (সেখানে ইডির মামলা চলছে) আবেদন করেন যে, তিনি চেকে সই করতে পারছেন না বলে, তাঁর সংস্থার কর্মীদের বেতন আটকে রয়েছে। চেক এবং ব্যাঙ্ক ফর্মে সই করার জন্য তিনি আদালতে আবেদনও জানান। সেই নিয়ে আদালতে নিজেদের আপত্তির কথা তুলল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডির আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, যে হেতু টাকার ব্যাপার, তাই ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই টাকা সরিয়ে ফেলা হতে পারে।
তবে ইডির আইনজীবীর দাবি উড়িয়ে দিয়ে আদালতে বাকিবুরের আইনজীবী জানান, এনপিজি চালকলের প্রায় ১০০০ কর্মচারীর বেতন, পিএফ এবং ইএসআই দিতে হয়। ইলেকট্রিক বিল দিতে হয়। ৭৫ কোটি লোনের ইএমআই দিতে হয়। তাই পাঁচটি চেক আপাতত সই করতে দেওয়া হোক। না হলে চালকল বন্ধ হয় যাবে বলেও আদালতে জানিয়েছেন বাকিবুরের আইনজীবী।
বাকিবুরের আইনজীবী আদালতে এ-ও জানিয়েছেন, অ্যাকাউন্ট থেকে কত টাকা তোলা হবে, সে বিষয়ে জানতে চাইছেন ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু কত টাকা তোলা হবে, তা নির্দিষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয়। এর পর বিচারক ইডির কাছে জানতে চান, কেন তাঁরা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিষয়ে জানতে চাইছে। উত্তরে ইডির আইনজীবী জানান, টাকা যদি অন্য জায়গায় বা অন্য অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলা হয়, তা হলে অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যাবে। ইএমআই বা কর্মচারীদের বরাদ্দ বাবদ যে টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে তোলা হবে, তার হিসাব দেওয়ার আর্জিও তিনি জানিয়েছেন। এর উত্তরে বাকিবুরের আইনজীবী জানান, কোনও নির্দিষ্ট হিসাব না দেওয়া হলেও মোটামুটি হিসাব দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গত অক্টোবরে গ্রেফতার হন বাকিবুর। তার আগে কলকাতার কৈখালির ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। ইডি সূত্রে দাবি, অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বাকিবুরের। তিনি রাজ্যের রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি ইডির। বাকিবুরের বাড়ি থেকে পাওয়া নথির সূত্র ধরেই গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইডির দাবি, দু’জনের মধ্যে একটি যোগসূত্রও ছিল।