গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
সন্দেশখালিকাণ্ডে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে তুলনা করল ইডি। কলকাতা হাই কোর্টে ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘ওসামা বিন লাদেনের মতো ভয়েস মেসেজ করছেন শাহজাহান। তার পরেও পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না?’’
সন্দেশখালি মামলার শুনানি
রাজ্য: শাহজাহানের বাড়ির সামনে ১০টি সিসিটিভি লাগানো হয়েছে।
বিচারপতি: এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেননি?
রাজ্য: খোঁজ চলছে।
ইডির উদ্দেশে বিচারপতি: একটা ক্ষমতাশালী কেন্দ্রীয় সংস্থা হয়ে আপনারা ধরতে পারছেন না। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিয়েও ধরতে পারছেন না। আর সিবিআই গ্রেফতার করতে পারবে, এটা মনে করছেন?
ইডি: দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে ইডি। এই ঘটনায় গত ১২ দিন ধরে পুলিশ ধরতে পারনি।
সিবিআই: ওসামা বিন লাদেনের মতো ভয়েস মেসেজ করছেন শাহজাহান। তার পরেও পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না?
ইডি: ‘আমি সুভাষ বলছি....’-র মতো বার্তা পাঠাচ্ছেন শাহজাহান। পুলিশ কী করছে?
বুধবার সন্দেশখালি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয় সিবিআই এবং রাজ্যকে এক জন করে এসপি পদমর্যাদার অফিসারের নাম দুপুর ২টোর মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে। বিকেল ৪টেয় রায় ঘোষণা করবে হাই কোর্ট।
সন্দেশখালি মামলায় ইডির হয়ে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) এসভি রাজু এবং আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী সওয়াল করেন। রাজ্যের তরফে ছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এবং আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডির পাঁচ সদস্যের একটি দল। তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে খবর, রেশন দুর্নীতির সূত্র ধরে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন ইডি আধিকারিকেরা। ‘গ্রামবাসীদের’ হাতে আক্রান্ত হন তাঁরা। তিন জন আধিকারিককে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এক জন গুরুতর চোট পান। ওই দিন বাড়িতে গিয়ে যদিও শাহজাহানের দেখা মেলেনি। ইডির দাবি, শাহজাহানের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন ৮০০ থেকে ১০০০ লোক।
অন্য দিকে, শাহজাহানের এখনও খোঁজ মেলেনি। এর মধ্যে একটি অডিয়োবার্তা ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বক্তা নিজেকে শাহজাহান বলে দাবি করেন, ইডি এবং সিবিআই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তৃণমূল নেতাদের হয়রানি করছে (ওই অডিয়োবার্তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ওই কণ্ঠে শোনা যায়, ‘‘আমার অঞ্চলের সভাপতি যাঁরা আছেন, যুব সভাপতি যাঁরা আছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক যাঁরা আছেন, সবার কাছে আমার অনুরোধ— এই সব সিবিআই, ইডিকে নিয়ে কোনও ভয় নেই। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ তোমরা বুঝতে পারছ, এটা একটা ষড়যন্ত্র। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’’ পাশাপাশি এ-ও বলেন, ‘‘আমি কোনও দিন অন্যায়, কোনও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নয়। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে যে আমি কোনও রকম অপরাধে যুক্ত, তা হলে আমি আমার নিজের মুন্ডুটা নিজে কেটে দেব।’’ ওই অডিয়োবার্তার প্রসঙ্গই বুধবার আদালতে তোলে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
সন্দেশখালির ঘটনায় ন্যাজাট থানায় পর পর তিনটি এফআইআর দায়ের হয়। ইডি একটি এফআইআর দায়ের করে। একটি এফআইআর করা হয় পুলিশের তরফে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে। এ ছাড়া, ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মহিলা এবং শিশুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে একটি এফআইআর দায়ের হয় একই থানায়।