সাংবাদিক বৈঠকে মমতা
সিবিআই এবং ইডি-র মতো সংস্থাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অতীতে একাধিক বার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার দেশকে ‘এজেন্সি রুল’ থেকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার দাবি জানালেন তিনি। দু’জন ব্যক্তির অঙ্গুলিহেলনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি কাজ করে থাকে, এমন ইঙ্গিত দিয়ে মমতার স্পষ্ট বক্তব্য, সংস্থাগুলির কাজে হস্তক্ষেপ না করে শুধুই সংস্থার কর্মীদের বেতন দেওয়ার কাজটুকু করুক কেন্দ্র। এরই পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী বললেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্বায়ত্তশাসনের দাবি গোটা দেশে তিনিই প্রথম তুললেন।
বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় কেলেঙ্কারি, কয়লা ও গরু পাচার থেকে শুরু করে ‘ভোট-পরবর্তী হিংসা’, এসএসসিতে শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতি-সহ রাজ্যের বহু মামলার তদন্ত করছে সিবিআই এবং ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই সব মামলায় তলবও করা হচ্ছে রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শুরু করে শাসকদলের নেতাদের। সম্প্রতি এসএসসি-কাণ্ডে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং পরেশ অধিকারীকে তলব করেছে সিবিআই। ডাকা হয়েছিল বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকেও। তা নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে রাজ্য সরকার। এই আবহে সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে আবারও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সিবিআই এবং ইডি-র মতো সংস্থার অপব্যবহারের অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীদের অপদস্থ করছে এই সরকার। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে ফেলেছে। সব ব্যাপারে এজেন্সি ব্যবহার করে তুঘলকি কায়দায় সরকার চালাতে চাইছে কেন্দ্র। তবে সব এজেন্সি খারাপ, আমি বলছি না। ওরা সঠিক ভাবে কাজ করতে পারছে না। কারণ, দু’জনের (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ) হাতে অটোনমি রয়েছে।’’
সুর চড়িয়ে মমতা আরও বললেন, ‘‘এ রকম নিকৃষ্টমানের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ স্ট্যালিন, হিটলার আর মুসোলিনিও করেনি। আমি আবার দেশকে ভালবাসি। কিন্তু যা চলছে, তা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। ক্ষমতায় এসে এ ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা উচিত নয়। এজেন্সিগুলিকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে দিতে হবে। দেশকে এজেন্সি রুল থেকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে অটোনমি দেওয়া হোক। কেন্দ্র শুধুই বেতন দেওয়ার কাজ করুক।’’ বৈঠক শেষে মমতার সংযোজন, ‘‘কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অটোনমির দাবি আমিই প্রথম তুললাম।’’