প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের মধ্যেই মদ বিক্রি শুরু হয়েছিল সোমবার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১১০ কোটি টাকার মদ। তা থেকে রাজ্যের আয় প্রায় ৭০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও মদ্যপায়ীদের স্বস্তি দিতে অনলাইনে মদ কেনার ব্যবস্থা করেছে সরকার। ‘ই-রিটেল’ নামে মোবাইল অ্যাপ চালু করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মদ কিনতে চেয়ে ১১ হাজার মানুষ বরাত দিয়েছেন। ওই বরাতের মূল্য তিন কোটি টাকা।
পরিস্থিতি এমনই যে, আবগারি দফতর অসংখ্য বাড়িতে মদ পৌঁছে দিতে অপারগ। তাই আপাতত ই-রিটেল বন্ধ রাখা হয়েছে। ১১ হাজার মদ্যপায়ীর বাড়িতে মদ পৌঁছে দেওয়ার পরে ফের তা চালু হবে।
নবান্নের খবর, খুচরো বিক্রেতারা রাজ্য বেভারেজ কর্পোরেশন থেকে ইতিমধ্যেই ৩০০ কোটির মদ কিনে দোকানে মজুত করেছেন। আবগারি দফতর জানাচ্ছে, প্রতিদিন গড়ে পাঁচ লক্ষ লিটার মদ বিক্রি হচ্ছে। প্রায় আড়াই হাজার দোকানে দিনে বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ কোটি টাকার মদ।
আবগারি দফতরের কর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, মদের বিক্রি নিয়ে যত হইচই চলছে, বাস্তবে রোজগার ততটা হচ্ছে না। আরও বেশি রোজগারের কথা ছিল। এক আবগারি-কর্তা বলেন, ‘‘রোজ গড়ে যে-পরিমাণ মদ বিক্রি হয়, এখন তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ বিক্রি হচ্ছে। অনেক জায়গায় দোকান খোলেনি। বার, রেস্তরাঁ, হোটেলেও মদ বিক্রি বন্ধ। প্রতিদিন যে-রাজস্ব সরকারের ঘরে আসে, লকডাউনের মধ্যে আসছে তার অর্ধেক। তবে ৩০% অতিরিক্ত বিক্রয়কর চাপানোর ফলে কম মদ বিক্রি হলেও তুলনায় রোজগার হচ্ছে বেশি।’’
আরও পড়ুন: করোনার সচেতনতায় মুখ্যমন্ত্রীর লেখা গান কবিপ্রণামে
আবগারি দফতরের খবর, রাজ্যে প্রতিদিন ১৫ লক্ষ লিটার মদ বিক্রি হয়। তাতে রোজ রোজগার হয় ৪০-৫০ কোটি টাকা। এখন রোজ গড়ে পাঁচ লক্ষ লিটার মদ বিক্রি হচ্ছে, রোজগার হচ্ছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। লকডাউন উঠে গেলে এই রোজগার প্রতিদিন ৭৫ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আবগারি-কর্তাদের আশা। তবে রাজ্যের মানুষ প্রথম দিন বাদ দিয়ে যে-ভাবে ধৈর্য ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মদ কেনার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন, মাস্ক পরে পারস্পরিক দূরত্বের নিয়মবিধি মানছেন, আবগারি দফতরের কর্তারা তাতে রীতিমতো বিস্মিত।
আবগারি-কর্তারা জানাচ্ছেন, ই-রিটেল অ্যাপে যে এতটা সাড়া পাওয়া যাবে, সেটা আন্দাজ করা যায়নি। কলকাতা ও আশপাশের এলাকার দোকানগুলিতে দিনে ৪০০-৫০০ বোতলের বরাত এসেছে। কলকাতায় একটি বৃহৎ বিভাগীয় বিপণিতে মদ রাখা হয়। আবগারি দফতর জেনেছে, ওই বিপণির এক-একটি দোকানে দিনে আড়াই হাজারেরও বেশি মদের বরাত এসেছে। তারা আবগারি দফতরকে বলেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় হরেক জিনিসপত্রের জোগান দেওয়ার পরে তাদের পক্ষে এত মদ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া খুবই সমস্যার। তাই বাড়িতে মদ পৌঁছে দিতে কিছুটা সময় চেয়েছে বিভাগীয় বিপণি।
আরও পড়ুন: আটকে পড়াদের জন্য ই-পাস রাজ্যের, আবেদন কী ভাবে জেনে নিন