‘স্কুলের পথে কটূক্তি করে মদ্যপরা’ 

একাদশ শ্রেণির ছাত্রীটির কথায়, ‘‘স্কুলে যাতায়াতের পথে নানা সমস্যায় পড়ি। মদের দোকানের সামনের রাস্তায় বসে লোকজন মদ্যপান করে, আমাদের কটূক্তি করে— তাতে সব সময়ে ভয়ে ভয়ে থাকি। বাড়িতে জানালে বাবা-মাও ভয় পান।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫২
Share:

বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবসে পড়ুয়াদের পুরস্কার দিচ্ছেন কলকাতার ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার ব্রুস বাকনেল। সোমবার মিনাখাঁয়। নিজস্ব চিত্র

মানবপাচার নিয়ে অনুষ্ঠান। সেখানে হাজির কলকাতার ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার ব্রুস বাকনেল। হাজির উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তাদের অনেকেই। সেখানেই বক্তব্য রাখতে বলা হয়েছিল দু’জন ছাত্র-ছাত্রীকেও। মঞ্চে তাদের কথা শুনেই অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

একাদশ শ্রেণির ছাত্রীটির কথায়, ‘‘স্কুলে যাতায়াতের পথে নানা সমস্যায় পড়ি। মদের দোকানের সামনের রাস্তায় বসে লোকজন মদ্যপান করে, আমাদের কটূক্তি করে— তাতে সব সময়ে ভয়ে ভয়ে থাকি। বাড়িতে জানালে বাবা-মাও ভয় পান।’’ ছাত্রটিও বলে, ‘‘আমাদের স্কুলের সামনে একটি ওষুধের দোকান আছে। সেখানে বসে থাকেন স্কুলের প্রাক্তন দাদারা। সহপাঠিনীদের দেখে নানা কটূক্তি করেন তাঁরা।’’

পড়ুয়াদের এই অভিযোগ শুনে চুপ থাকেননি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক মহিলা আধিকারিকও। সমস্যার আরও গভীরে ঢুকে তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রীরা বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বাইরের জগতের পরিস্থিতি জানায়। অনেক ক্ষেত্রে তাতে আবার উল্টো ফল হয়। স্কুল ছাড়িয়ে দিয়ে নাবালিকার বিয়ের ব্যবস্থা করতে উঠেপড়ে লাগেন অভিভাবকেরা।’’

Advertisement

ছাত্রীর অভিযোগ শুনে মঞ্চে হাজির জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এমন ঘটনা ঘটে থাকলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে দিকেও নজর রাখব।’’ স্থানীয় বিডিও শেখ কামরুল ইসলামও বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘নারী পাচার ও বাল্যবিবাহ রুখতে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন হওয়া দরকার। প্রশাসনের তরফে সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবসে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ ব্লক অফিসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কলকাতার ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশন এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার বলেন, ‘‘নারীপাচার একটি সামাজিক ব্যাধি। সারা বিশ্বেই এটা দেখা যায়। উন্নতশীল দেশগুলিতেও দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে এই ঘটনা দেখা যাচ্ছে। আমরা পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও ছত্তীসগঢ়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে নারীপাচার ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করছি।’’

এ দিন মিনাখাঁ ব্লকের আটটি পঞ্চায়েতের ১৬টি স্কুলের প্রায় দেড় হাজার ছাত্রছাত্রী অনুষ্ঠানে এসেছিল। অভিভাবকেরাও ছিলেন। অনুষ্ঠানের পরে ব্লক অফিস থেকে মিনাখাঁ থানা পর্যন্ত নারীপাচার ও বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনামূলক পদযাত্রা হয়। পদযাত্রায় আগাগোড়া ছিলেন ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement