বহিষ্কৃত তৃণমূল কাউন্সিলর প্রদীপ চাকী।
মহকুমা শাসককে হেনস্তা করার অপরাধে দলের এক কাউন্সিলরকে শাস্তি দিয়েছিল তৃণমূল। মঙ্গলবার ডোমকলের সেই কাউন্সিলর প্রদীপ চাকী দলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনলেন। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বললেন, তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। আর সেই চক্রান্তে যুক্ত ডোমকল পুরসভার চেয়ারম্যানও।
গত শুক্রবার ডোমকলে টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলাকালীন বিশৃঙ্খলা তৈরি করার অভিযোগ উঠেছিল প্রদীপের বিরুদ্ধে। সেখানেই ডোমকলের এসডিও রাজীব মণ্ডলের উপরে তিনি চড়াও হন বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। যদিও সোমবারই প্রদীপ জামিন পেয়ে যান। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘‘আমাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। পৌরসভার চেয়ারম্যান জাফিকুল ইসলাম আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন।’’
শুক্রবারের ঘটনার পরই দলের তরফে ডোমকল পুরসভার কাউন্সিলর প্রদীপ ওরফে কার্তিককে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলের তরফে মহকুমা শাসকের কাছে ক্ষমাও চেয়ে আসেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কো-অডিনেটর অশোক দাস। অশোক বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূলে কোনও রকম বেয়াদপির জায়গা নেই। সরকারি আধিকারিককে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করলে, তা বরদাস্ত করা হবে না। রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশে তাই আমরা মহকুমা শাসকের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে এসেছি।’’
এর জবাবে মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে প্রদীপ বলেন, ‘‘দালাল লোকের টাকাতে ওঁর (অশোকের) সংসার চলে। যার ভোটে বুথ জেতা যায় না, সে কী বলছে তা মানি না। জেলা সভাপতি আবু তাহের খান আমাকে কারণ দর্শাতে বলতে পারেন। আর কেউ নয়।’’
তৃণমূলের বহিষ্কৃত কাউন্সিলর প্রদীপের অভিযোগ ছিল, কাউন্সিলরদের অপমান করা হয়েছিল বলেই তিনি প্রতিবাদ করেন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার ডোমকলে শ্রমিকদের টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলাকালীন, নিজের তালিকা নিয়ে হাজির হন তৃণমূলের ওই কাউন্সিলর। দাবি করেন, তার তৈরি তালিকাকে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সরকারি আধিকারিকরা রাজি না হওয়ায় বাদানুবাদ শুরু হয়। প্রদীপের বিরুদ্ধে টিকাকরণে বাধা দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ছাড়া খোদ এসডিও-কে শারীরিক ভাবে হেনস্থার অভিযোগও ওঠে তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। শুক্রবারই পুলিশ গ্রেফতার করে প্রদীপকে। পরে দলের কাউন্সিলের এবং সদস্যের পদ থেকেও তাঁকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়ে দেয় তৃণমূল।