ছবি: পিটিআই।
শব্দবাজি বিক্রি নিষিদ্ধ। বিক্রি হয় লুকিয়ে-চুরিয়ে। কিন্তু রাজ্য জুড়েই বাকি আতশবাজি প্রচুর পরিমাণে মজুত করে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু বিক্রিবাটাও হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে দীপাবলি আর ছটপুজোয় বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এই মজুত বাজি যাতে ক্রেতার হাতে না-পৌঁছয়, সেটা নিশ্চিত করাই এখন প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ।
এমনিতেই দুই ২৪ পরগনায় ধরপাকড় চলছিল। বৃহস্পতিবার জয়নগর ও ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে প্রায় এক কুইন্টাল বাজি উদ্ধার হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে ৭০০ কেজি। বাজি মজুত করায় মেমারি ও কালনায় দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গেও সকাল থেকে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে বিভিন্ন বাজারে। মালদহের ইংরেজবাজারে ক্রেতা সেজে প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
উল্টো ছবিও আছে। বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা ও চকবাজারে বাজি বিক্রি হয়েছে। আড়ালে শব্দবাজিরও বিক্রি চলছিল বলে অভিযোগ। উত্তরে রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার সদর বা দক্ষিণে হাসনাবাদ— ছবিটা কার্যত একই। কারবারিদের দাবি, কোর্টের নির্দেশ তাঁরা জানেন না।
আরও পড়ুন: করোনার ভয়ে কি বন্ধ হবে বাজির তাণ্ডব
পুলিশ বলছে, নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। ক্যানিং-সহ বেশ কিছু এলাকায় পুলিশ গাড়ি-বাইক থামিয়ে নাকা চেকিং করছে। ঝাড়খণ্ড থেকে পুরুলিয়ায় ঢোকা গাড়ির তল্লাশি শুরু হয়েছে। বিহার-ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিম বর্ধমানে বাজি ঢোকা ঠেকাতে সীমানা এলাকায় নাকা চেকিং দ্বিগুণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন। তবে কুলটির বরাকর ও ডুবুরডিহি সীমানায় কোনও নাকা চেকিং চোখে পড়েনি।
হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ— সর্বত্রই মাইকে প্রচার, লিফলেট বিলির পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন, ব্যবসায়ী সমিতিকে সচেতনতা প্রচারে শামিল করার চেষ্টা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে বাজি তৈরির এলাকায়।
আরও পড়ুন: মজুত বাজি বিপদ ডাকবে না তো! শঙ্কা কাটছে নামজুত বাজি বিপদ ডাকবে না তো! শঙ্কা কাটছে না
ব্যারাকপুর বা বারাসতের নীলগঞ্জ, হাবড়া-অশোকনগরে বাজি বাজার বসেনি। পশ্চিম মেদিনীপুরে গড়বেতার রাধানগরে বাজি বিক্রির তাঁবু পড়েনি রাস্তার ধারে। বোলপুরের বাজি ব্যবসায়ী সৌমেন চন্দ্র বলেন, “কয়েক লক্ষ টাকার বাজি মজুত করেছিলাম। কিন্তু নির্দেশ না-মেনে উপায় কী?” গোয়ালতোড়ের অসীম মাহাতোরা বাজির বদলে মোমবাতি ও প্রদীপ বিক্রি করবেন মনস্থ করেছেন।