গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যে দুর্নীতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে রাজ্য বিজেপি। সেই কারণ দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বাংলার কৃষকদের আপাতত পরবর্তী কিস্তির টাকা দেওয়া বন্ধ করার আর্জি জানালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। উপভোক্তাদের সঠিক তালিকা তৈরির জন্য রাজ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের একটি দল পাঠানোর দাবিও জানিয়েছেন দিলীপ।
বৃহস্পতিবার মোদীকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন দিলীপ সেই চিঠিতে কী কী ধরনের দুর্নীতি হতে পারে তার ৪টি আশঙ্কা জানানোর পাশাপাশি মোদীকে ৬টি পরামর্শও দিয়েছেন দিলীপ। সেই পরামর্শেই বলা হয়েছে, রাজ্যের পাঠানো কৃষকদের তালিকা যেন ভাল করে পরীক্ষা করা হয় কেন্দ্রের তরফে। আর সেটা না হওয়া পর্যন্ত বাংলায় পরের দফার টাকা পাঠানো বন্ধ থাকুক।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প কার্যকরের ক্ষেত্রে রাজ্যে নানা দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ তুলেছিল। একই সঙ্গে বিজেপি-র ঘোষণা ছিল ক্ষমতায় এলে কিসান সম্মান প্রকল্প চালু করা হবে। তবে নির্বাচনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই উদ্যোগ নেওয়ায় চলতি মাস থেকেই রাজ্যে এই প্রকল্প চালু হয়েছে। প্রথম দফার টাকা পেয়েছেন প্রথম দফায় নথিভূক্ত বাংলার কৃষকরা। মোদীকে পাঠানো চিঠিতে দিলীপ দাবি করেছেন, রাজ্যে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে ২৩ লাখ কৃষক নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন করলেও প্রথম দফার টাকা পেয়েছেন ৭ লাখ চাষি। বাকি কৃষকদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়নি বলে দাবি দিলীপের।
এ ছাড়াও নিজের চিঠিতে ‘সিন্ডিকেট রাজ’, ‘কাটমানি’ প্রসঙ্গের উল্লেখ করেছেন দিলীপ। তাঁর দাবি, বাংলায় সুবিধা পাওয়ার যোগ্য অনেক কৃষককে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকার তোষণের পথে হাঁটতে পারে বলেও চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দিলীপ। একই সঙ্গে দিলীপ লিখেছেন, এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক হলেও তা বাংলার ক্ষেত্রে সঠিক হবে না। কারণ, এই রাজ্যে তৃণমূল নেতাদের সহযোগিতায় অনেক অনুপ্রবেশকারীর কাছেও আধার কার্ড রয়েছে।
এই সব আশঙ্কা জানানোর পরেই দিলীপ লিখেছেন, আপাতত টাকা পাঠানো বন্ধ করে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রাজ্যের পাঠানো তালিকা পরীক্ষা করে দেখা হোক। সেই সঙ্গে গোটা তালিকা ‘পিএম কিসান’ পোর্টালে দেওয়া হোক। তালিকা থাকুক রাজ্যের সব জেলাশাসক, বিডিও এবং পঞ্চায়েত অফিসে। রাজ্যের যে কৃষকেরা পোর্টালে আবেদন করেও রাজ্যের ছাড়পত্র পাননি তাদের বিষয়টা দেখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের নিয়ে একটি টিম গঠন করা হোক। সেই দল বাংলায় এসে গোটা বিষয়টা দেখুক। দিলীপের দাবি, প্রকৃত গরিব কৃষকরা যাতে এই প্রকল্পের সুবিধা পায় সেই জন্যই তাঁর এই চিঠি।