বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
করোনা আবহে হস্টেলে থেকে যাওয়া পড়ুয়াদের বাড়ি পাঠিয়ে দিতে তৎপর হয়েছে আইআইটি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কলকাতা থেকে এসে সেখানেই ঘুরে গেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
বুধবার খড়্গপুরে আসেন দিলীপ। প্রথমে যান রেল বাংলোয় তাঁর কার্যালয়ে। সেখান থেকে আইআইটি যান। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন খড়্গপুর আইআইটিতে দলীয় মতাদর্শের প্রতি সহানুভূতিশীল অধ্যাপকদের আমন্ত্রণেই সেখানে গিয়েছিলেন দিলীপ। যদিও দিলীপ নিজে সেই নিয়ে মুখ খোলেননি। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু বলেন, “অনেক দিন আইআইটিতে যাওয়া হয়নি। অধ্যাপকদের সঙ্গে দেখা হয়নি। তাই দেখা সাক্ষাৎ করার রয়েছে। খাওয়া-দাওয়ারও ব্যাপার রয়েছে।”
এখনও থেকে যাওয়া পড়ুয়াদের বাড়ি পাঠাতে মঙ্গলবার রাত থেকে হলের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন কর্তৃপক্ষ। সেই আবহে বিজেপির রাজ্য সভাপতির এ দিনের আইআইটি সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন থেকে যাওয়া পড়ুয়াদের একাংশ। অম্বেডকর হলের এক ছাত্রের প্রশ্ন, “আমরা থাকলে করোনা বাড়ছে। আর বাইরে থেকে রাজনৈতিক দলের নেতারা এলে করোনা হচ্ছে না! এটা কী চলছে আমাদের প্রতিষ্ঠানে?” সরব হয়েছে তৃণমূলও। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির অভিযোগ, “দিলীপ ঘোষের গাড়ি চালক থেকে কলকাতায় ওঁর বাড়ির পরিচারিকা সকলে করোনায় আক্রান্ত। তারপরেও উনি নিভৃতবাসে না থেকে আইআইটিতে এসে আমোদ-প্রমোদ করছেন। বিজেপি কেন্দ্রের শাসকদল হওয়ায় কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান আইআইটি এই সবে প্রশ্রয় দিচ্ছে।”
আইআইটির রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ অবশ্য জানান, আইআইটিতে অনেকেই বাইরে থেকে আসেন। তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠান চত্বরের অনেক কর্মী, আমাদের বাজারের কিছু দোকানি বাইরে তো থেকেই আসছেন।’’ ইন্টারনেট সংযোগ কাটা নিয়ে তাঁর উত্তর, ‘‘পড়ুয়াদের কথা ভেবেই ওঁদের বাড়ি যেতে বলেছি। প্রায় সব পড়ুয়া চলে গেলেও কয়েকজন অকারণে হলে রয়েছে। পড়াশোনা যখন হচ্ছে না তখন হলে ইন্টারনেট কী প্রয়োজন? তাই ইন্টারনেট সংযোগ বিছিন্ন করা হয়েছে।’’
এ দিন রেল বাংলোয় বসে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হন দিলীপ। তাঁর দাবি, “এই রাজ্যের সরকার ধরে নিয়েছে করোনা রুখতে পারবে না। সেই চেষ্টাও নেই। যে লকডাউন হচ্ছে তার কার্যকারিতা নেই। রাজ্য সরকার আসলে লকডাউন করে বিজেপিকে আটকাতে চাইছে।” সম্প্রতি বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগদানের হিড়িক প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূল পুলিশ দিয়ে মিথ্যা মামলা, ভয় দেখিয়ে কিছু লোককে নিয়ে যাচ্ছে। সময় হলে তাঁরা আবার আমাদের দলে ফিরে আসবে।”