মমতা বনাম প্রিয়ঙ্কা যুদ্ধের পিছনে অন্য পরিকল্পনা বিজেপি-র। ফাইল চিত্র
অনেক ধোঁয়াশার শেষে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঘোষণা করেছেন ভবানীপুরে মমতাবন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দলের প্রার্থী আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। অনেক নামের মধ্যে ঠিক এই নামটাই কেন বাছা হল? তা নিয়ে প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর থেকেই চলছে নানা জল্পনা। কারণটা আনন্দবাজার অনলাইনেক জানালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ভবানীপুর মানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আসন। তাই গোটা রাজ্যে ভোট পরবর্তী যে সন্ত্রাস চলছে তার বিরুদ্ধে লড়াই হবে ওই কেন্দ্রে। মমতা হলেন সন্ত্রাসের মুখ, আর প্রিয়ঙ্কা প্রতিবাদের মুখ।’’
২০১৪ সালে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরে ২০২০ সালে যুব মোর্চার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান। এর আগে ২০১৫ সালে তিনি পরাজিত হন কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে। ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিলেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি এন্টালি আসনে তৃণমূলের স্বর্ণকমল সাহার কাছে পরাজিত হন।
প্রিয়ঙ্কাকে ভবানীপুরে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এই দুই হার নয়, বিজেপি শিবির মনে রেখেছে তাঁর সাম্প্রতিক জয়ের কথা। গেরুয়া শিবির মনে করে, ভোটে দু’বার হারলেও আইনি লড়াইয়ে দলকে বড় জয় এনে দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কাই। গত ১৯ অগস্ট ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, খুন, ধর্ষণ, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মতো ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের তদন্ত করবে সিট। এই মামলায় বিজেপি-র পক্ষে আইনজীবীদের প্রধান মুখই ছিলেন প্রিয়ঙ্কা। বিজেপি শিবির তখন থেকেই প্রিয়ঙ্কাকে ‘লড়াকু’ আখ্যা দিতে শুরু করে।
বিজেপি-র অন্দরের সেই ধরণা স্পষ্ট করে শুক্রবার দিলীপ বলেন, ‘‘রাজ্যে যে সন্ত্রাসের পরিবেশ তা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বলেই আমরা মনে করি। আর অসহায় বিজেপি কর্মীদের রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করেছেন প্রিয়ঙ্কা। তিনি সফল। ভোটেও তিনি সাফল্য পাবেন। কারণ, মমতা মানেই সন্ত্রাস এবং প্রিয়ঙ্কা মানেই সন্ত্রাসের প্রতিবাদ।এই হিসেবে প্রচার করা হবে ভবানীপুরের উপনির্বাচনে।’’তাঁর দাবি, হতে পারে এটা একটি আসনের উপনির্বাচন। কিন্তু তার প্রচারে বিজেপি মনে করাবে রাজ্যের পরিস্থিতি। প্রিয়ঙ্কাকে সামনে রেখে ‘ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস’ এবং তা নিয়ে আদালতের রায়ই হবে ভবানীপুরের লড়াইয়ে বিজেপি-র প্রধান অস্ত্র।