বিধানসভা ভোটের আগে টলিউড এবং শিল্প-সংস্কৃতির জগৎ থেকে অনেককেই দলে যোগদান করিয়েছিল বিজেপি। ভোটে বিজেপির পরাজয়ের পরে তাঁদের অনেকেই দলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেছেন। বিজেপিও তাঁদের সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক অস্বীকার করতে মেনে পড়েছে। যার প্রমাণ মিলল বুধবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে। অভিনেতা অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্যকে সোমবার সিপিএম পরিচালিত শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন পূর্তির অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল, যাঁরা ২০১৯ সালে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। অনিন্দ্য এবং রূপার বিজেপি ছাড়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু এ দিন বলেন, ‘‘ওঁরা কারা? আমি তো চিনি না!’’ যদিও ওই অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিজেপিতে যোগদানের সময় তাঁদের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন দিলীপবাবুই। সে কথা তাঁকে কে মনে করিয়ে দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘কত লোক একসঙ্গে এসেছেন, যোগ দিয়েছেন। অত মনে রাখা যায় না। দলের জন্য কিছু করলে তবে তো মনে থাকবে!’’
দিলীপবাবুর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রূপা বলেন, ‘‘আপনি দিল্লিতে যখন মঞ্চে আমার গলায় উত্তরীয় পরিয়ে বিজেপিতে বরণ করেছিলেন, তখন আপনার সহজ সরল আপ্যায়নে মনে হয়েছিল, আপনি আর যা-ই হোন, ভণ্ড নন। শিল্পীদের কদর করেননি। তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু দলের কর্মীদের কদর করুন। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝুন।’’
অভিনেতা এবং কলাকুশলীদের অবস্থান বদল নিয়ে গোল বেধেছে সিপিএমের অন্দরেও। শ্রমজীবী ক্যান্টিনের অনুষ্ঠানে অনিন্দ্য পুলক এবং রূপা যাওয়ার পরে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্র দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বেও আলোচনা হয়েছে। দলের রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছেন, দুর্দিনে যাঁরা নানা ভাবে দলের সঙ্গে থেকেছেন, তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে সরে যান, দল তা কোনও ভাবেই চায় না। তাই সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর জন্য দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।