হাওড়া, নদিয়া-সহ রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় হিংসার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, বাংলাকে সামলানোর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলেও দিল্লিতে গিয়ে দেশ সামলানোর কথা বলছেন মমতা। মমতার উদ্দেশে দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘বাংলাকে সামলাতে পারেন না, দেশ সামলানোর কথা বলছেন (মমতা)। আমি জানি না দেশের লোক কী ভাবে নেবেন। তাঁর (মমতার) পারফরম্যান্স দেখেই বিচার করবে। গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল!’’
বুধবার মেদিনীপুর শহরে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসেন দিলীপ। সেখানে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগে দিলীপ বলেন, ‘‘তিনি এখানকার মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপালও। এখন তিনি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী হতে চাইছেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হতে চাইছেন। সবই তিনি হবেন।’’
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন দিলীপ। আগামী ২৩ জুন ত্রিপুরায় চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য ত্রিপুরায় ভোটপ্রচারে গিয়েছেন তিনি। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার আগরতলায় নির্বাচনী জনসভায় অভিষেকের ভাষণের সময়ই কলকাতায় তাঁর বাড়ি ‘শান্তিনিকেতন’-এ স্ত্রী রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। তবে দিলীপের দাবি, ‘‘পশ্চিমবঙ্গকে চালাতে পারেন না। এখানে পাঁচ দিন ধরে আগুন জ্বলছে। এখান থেকে শান্তি পাওয়ার জন্য দিল্লি পালিয়ে গিয়েছেন (মমতা)। তাঁর (মমতার) পার্টির মহামান্য ভাইপো পালিয়ে গিয়েছেন ত্রিপুরায়।’’
রাজ্যের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়েও সরব হয়েছেন দিলীপ। দিলীপ বলেন, ‘‘অনেক তৃণমূল নেতা পরীক্ষা না দিয়ে চাকরি করছেন। যাঁরা টাকার জোরে বা ক্ষমতার জোরে চাকরি পেয়েছেন, সেই তালিকা তৈরি করছি। সে সব নাম আদালতে জমা দেওয়া হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্যে স্বাস্থ্য বিভাগ গোয়ালঘরে ঢুকে যাচ্ছে। এটা কি সরকার চলছে না সার্কাস? কেন্দ্র সরকার এত কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে, যাচ্ছে কোথায়? কেন গাছের তলায় স্কুল চালাতে হচ্ছে আর গোয়ালঘরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র? এই সরকারকে জবাব দিতে হবে।’’
যদিও দিলীপের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার পাল্টা দাবি, ‘‘সিবিআই নিয়ে বিচারপতি কী বলেছেন, সেটা নিশ্চয় ওঁর জানা রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকাতে সিবিআইয়ের ভয় দেখাচ্ছে বিজেপি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি তাদের মন মতো কিছু করতে পারছে না বলে ভয় পাচ্ছে। বাইরে থেকে লোক এনে ইন্ধন দিয়ে গন্ডগোল করার চেষ্টা করেছিল, তা প্রতিহত করেছে বাংলার জনগণ।’’