—ফাইল চিত্র।
বিক্ষুব্ধ, বসে যাওয়া এবং তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’-এর কারণে আতঙ্কিত কর্মীদের চাঙ্গা করতে তিনটি ‘রাজনৈতিক যাত্রা’র সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বাদল অধিবেশন শেষ হলেই সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে তা করার পরিকল্পনা হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যে থমকে থাকা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প যাতে ফের গতি পায়, সে জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে আজ থেকে বৈঠক শুরু করেছেন বাংলার বিজেপি সাংসদেরা। সময় চাওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও।
বিধানসভা ভোটের পরে কার্যত ছত্রভঙ্গ রাজ্য বিজেপি। তৃণমূল থেকে আসা বহু কর্মী ইতিমধ্যেই হয় দল ছেড়েছেন, নয় তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। বসেও গিয়েছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে দলকে চাঙ্গা করার পরিকল্পনা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে বৈঠকে বসেন রাজ্য বিজেপি সাংসদেরা। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অমিত মালব্য, শ্রীপ্রকাশ। বৈঠকে যোগ দেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীও।
সম্প্রতি রাজ্য থেকে যে চার সাংসদকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে, তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও নৈশ বৈঠকে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। সূত্রের মতে, পরিবর্তে স্থির হয়েছে, কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’র শিকার হয়েছেন যাঁরা, তাদের বাড়ি গিয়ে পাশে থাকার বার্তা দেবেন দলীয় নেতৃত্ব। রাজ্যের তিন প্রান্ত থেকে ওই রাজনৈতিক যাত্রা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কোন এলাকায়, কবে ওই যাত্রা হবে, তার দিনক্ষণ পরে স্থির করা হবে।
পাশাপাশি রাজ্যে থমকে থাকা কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে তদ্বির করার জন্য মন্ত্রীদের কাছে দরবার করার কৌশল নিয়েছেন দিলীপ ঘোষেরা। আজ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। পরে দিলীপ বলেন, ‘‘রাজ্যের স্কুল-কলেজগুলিতে অলচিকি হরফের শিক্ষকের অভাব মেটাতে শিক্ষামন্ত্রীকে বলা হয়েছে।’’ রাজ্যে কেন্দ্রের পাঠানো করোনা টিকা কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘সেল, কোল ইন্ডিয়ার মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার হাসপাতালগুলিতে যাতে কেন্দ্র টিকাকরণ কেন্দ্র খোলে, তার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।’’ দিলীপবাবু স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জানান, রাজ্যে রাজনৈতিক রং দেখে টিকা দেওয়া হচ্ছে। যা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ঠিক হয়েছে আগামী দিনে রেল, সড়ক পরিবহণ, গ্রামোন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করবেন দিলীপরা।
প্রধানমন্ত্রীর কাছেও সময় চেয়েছেন দিলীপরা। আজ প্রথমে দুপুরে ও পরে বিকেলে শোনা যায়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠক হয়নি। পরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আশা করছি এক-দু’দিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ডাক পাব।’’ এ দিনের কোনও বৈঠকেই হাজির ছিলেন না বাবুল সুপ্রিয়।