—ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা তৃণমূলের তহবিলে জমা হয় বলে রবিবার অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া ৫০ হাজার কোটি টাকা চেয়েছেন। চিঠিতে সেই টাকার হিসাবও দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সেই উদ্যোগকে কটাক্ষ করে এ দিন আইসিসিআর-এ দলীয় অনুষ্ঠানে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের টাকা কী ভাবে দলের তহবিলে ঢোকাতে হয়, তা দেখতে মানুষকে পশ্চিমবঙ্গে আসতে হবে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকার হিসাব দেবেন না বলে মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী দিল্লির বৈঠকে যান না। হিসাব এড়াতে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখে টাকা চান।’’
মমতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করলেও পাল্টা কোনও হিসাব দেননি দিলীপবাবু। তাঁর কাছে কি পাল্টা হিসাব আদৌ আছে? দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আছে। আমরা কেন্দ্রের কয়েকটা দফতরের কাছ থেকে রাজ্যের পাওয়া টাকা, সে সব খরচ করতে না পারা ইত্যাদি হিসাব জোগাড় করেছি। সময় হলে সেগুলো প্রকাশ করব।’’ কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, মমতার সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ দিলীপবাবু তুলছেন এখন। তা হলে তার সমর্থনে হিসাব পরে দেবেন কেন? আর কবেই বা তাঁর সময় হবে? দিলীপবাবু বলেন, ‘‘ভোটের সময় ওই হিসাব দেওয়া হবে। যেগুলো পুরভোটে প্রাসঙ্গিক, সেগুলো ওই ভোটের প্রচারে এবং বাকিগুলো বিধানসভা ভোটের প্রচারে দেব।’’
তৃণমূলও দিলীপবাবুর তোলা অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি ভুল দাবি করে থাকলে তা খণ্ডন করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর বা অর্থমন্ত্রীর দফতরের। দিলীপবাবু এ সব বলছেন কেন? ওঁরা প্রশাসন এবং দলকে বরাবর গুলিয়ে ফেলেন। আর উনি অর্থনীতির কিছু বোঝেন না। সুতরাং, তিনি এ বিষয়ে যত কম বলেন, তত ভাল।’’ পার্থবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘আসলে দিলীপবাবুরা মাঝে মাঝেই এ রকম অভিযোগ তুলে বাজার গরম করতে চান। কিন্তু এই ধরনের অভিযোগ করতে হলে হিসেব দিতে হয়। কোথা থেকে কত টাকা এসেছে এবং তার কত কোন খাতে খরচ হয়েছে, এ সব হিসাব না দিয়ে ওই অভিযোগ রাজনৈতিক ফায়দার জন্য করা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ছক কষেই খুন মা-মেয়েকে, চুল ও কানের দুল থেকে মিলল সূত্র
কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য বাজেট নিয়ে এ দিন আইসিসিআর-এ দলীয় কর্মশালা করে বিজেপি। সেখানে মমতাকে নিশানা করার পাশাপাশি দিলীপবাবু দলের নেতাদের বলেন, ‘‘বাজেটকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করে আমাদের আগামী দিনের নির্বাচনী পটভূমি তৈরি করতে হবে।’’
রাজ্য বিজেপির সম্পাদক রীতেশ তিওয়ারি ওই অনুষ্ঠানে দলীয় সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদবকে প্রশ্ন করে এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে ঋণের বোঝা কমানোর বিষয়ে তাঁদের কোনও পরিকল্পনা আছে কি না। ভূপেন্দ্র সদুত্তর এড়িয়ে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। সেই ভাবেই চলা হবে।’’